হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন করোনা আক্রান্ত সুনামগঞ্জের চিকিৎসক দম্পতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০২০, ১:১০:২৪
সুস্থ হয়ে ওঠেছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া সুনামগঞ্জের চিকিৎসক দম্পত্তিসহ ৬ জন।
রোববার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবুল বাশার মো. ওসমান হায়দার মজুমদার ও তার স্ত্রী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সুমাইয়া আফরিন শান্তা, এম্বুলেন্স চালক ক্ষিরোদ কুমার হাজংসহ ৬ জনকে এদিন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।
সুস্থ হয়ে ওঠা অন্যরা হলেন- বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর তাপস চক্রবর্তী, স্বাস্থ্যকর্মী আশিকুর রহমান ও লালারগাঁও বাসিন্দা গাজিপুর ফেরত উত্তম দাস।
রোববার দুপুরে হাসপাতাল সম্মুখে তাদের হাততালি ও উপহার সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে
ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সফর উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ্বাস, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরুয়ার আলম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, যু্ব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন, বাদাঘাট দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি স্বপন কুমার বর্মণসহ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা –কর্মচারী এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারীবৃন্দ।
সুস্থ হওয়া সকল রোগীদের ছাড়পত্রসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ভিটামিন সি যুক্ত ফলাদি উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।
ছাড়পত্র পাওয়া মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুমাইয়া আফরিন শান্তা জানান, আল্লাহর রহমতে তিনি ও তার স্বামী ডা. আবুল বাশার মো. ওসমান হায়দার মজুমদার এখন সুস্থ আছেন। অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে সাহস যোগানো ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি সিভিল সার্জন মো. শামস উদ্দিন, ইউএইচএফপিও ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিম্বাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি সকলকে সাবধানে ও সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানান। কেউ আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর তারা দু’জনেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন কোথায় চিকিৎসা নেবেন। কিন্তু সিভিল সার্জন ও ইউএইচএফপিও মহোদয়ের সহযোগিতায় তারা নিজ কোয়ার্টারেই আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেন। তিনি তাদের রোগমুক্তির জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। শীঘ্রই তিনি কাজে যোগদান করবেন।
ছাড়পত্র পাওয়া এম্বুলেন্স চালক ক্ষিরোদ কুমার হাজং জানান, তার শারিরীক অবস্থা ভালো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি বাড়ীতে আছেন। তার অসুস্থতাকালীন সময়ে যারা আর জন্য দোয়া, আশীর্বাদ এবং সহায়তা করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। শীঘ্রই তিনি কাজে যোগদান করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, আজ ৬ জন সম্পুর্ণ সুস্থতা লাভ করে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এটি অনেক আনন্দের বিষয়। তারা সকলেই সুস্থ আছেন। শীঘ্রই তারা কাজে যোগদান করবেন। সবধরণের রোগীর জন্যই হাসপাতাল খোলা রয়েছে। লকডাউনের মতো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়াতে চিকিৎসা নিতে এসে কোন লক্ষণ ও ভ্রমন বৃত্তান্ত গোপন না করতে তিনি সকলকে অনুরোধ জানান। একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত বাড়ির বাইরে অযথা ঘুরাঘুরি না করে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার জন্য তিনি সকলকে অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকা থেকে শনাক্ত হওয়ার পর পালিয়ে আসা একজন রোগী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা উদ্ধার করে থেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং পরবর্তীতে তিনি ছাড়পত্র পান। আজ ছাড়পত্র পাওয়া ৬ জনসহ মোট ৭ জন ছাড়পত্র পেলেন। বর্তমানে একজন নার্স আইসোলেশনে রয়েছেন। তার ২য় পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাকেও ছাড়পত্র প্রদান করা হবে।
গত বুধবার লকডাউন থাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর লকডাউন তুলে নিয়ে পুর্বের ন্যায় সকল স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়।