নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২২, ১০:৩৩:৪৭
অটো চলাচল ও মালিক-শ্রমিক অনৈক্যকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতি নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ রুটে ১৫দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। বাস মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতারা বলছেন, সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, ইলেকট্রিক চালিত অটোরিকশার জন্য ঠিকমতো গাড়ি চালাতে না পারা, কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পাওয়ার অভিযোগ এবং মালিকদের সাথে গাড়ী চালনোর আয়-ব্যয়ের বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জুলাই থেকে কোন ধরনের নোটিশ না দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয় বাস শ্রমিক সমিতি। মালিকদের না বলে বাস বন্ধ করে দেওয়ায় দুই পক্ষের টানা পড়োনে ১৫ দিনেও চালু হয়নি নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ রুটের বাস।
এ ঘটনার পর থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় উভয় সমিতি। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। এই রুট দিয়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় গত ১৫ দিন থেকে যাত্রীরা অনেকটা বাধ্য হয়ে সিএনজি টমটম ও অটোরিকশাযোগে চলাচল করছেন। কয়েক দফা বৈঠকের পরও আপোস মীমাংসা না হওয়ায় আজ পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
হঠাৎ করে বাস বন্ধ হওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে জনসাধারণ। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জজ কোর্ট ও বিভিন্ন অফিস আদালতে আসতে দূর্ভোগের শিকার হয়েছে। বাস বন্ধ থাকায় শহরের আখড়া পয়েন্ট থেকে অবাধে চলাচল করছে অটোরিকশা।
বাস বন্ধ হওয়ার সুযোগে অটোরিকশা ও সিএনজি গুলো তাদের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সাথে বাক-বিতন্ডা লেগেই আছে।
জেলা শহর কিবরীয়া ব্রিজ পয়েন্ট থেকে ২৫ জুলাই সোমবার পর্যন্ত অটোরিকশার ভাড়া ছিল ৫০ টাকা, ইমামবাড়ির ভাড়া ছিল ৩০ টাকা, এখন ৫০ ও ৭০ টাকা। এমনকি স্থান ভেদে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, গত কয়েকদিন আগেও হবিগঞ্জ থেকে নবীগঞ্জ শহরের এসেছি ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে। কিন্তু আজ গ্যাস বন্ধ তেলে চলতে হয় বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া দিতে হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। এছাড়া অটোরিকশা ভাড়াও নিয়ন্ত্রণহীন । বিকল্প কোন মাধ্যম না থাকায় বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে বেশি ভাড়া দিয়ে।
নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ রোডের বাস শ্রমিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, অটোরিকশার জন্য তারা ঠিক মতো গাড়ি যেমন চালাতে পারছে সেইভাবে আয় করতে না পারায় তাদের ছেলে মেয়েদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এমনকি তাদেরকে মালিক পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা না করায় তাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না বিধায় তারা বাস বন্ধ করে দিয়েছেন।
হবিগঞ্জ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদাক মো. সজীব আলী বলেন, আঞ্চলিক সড়কে অটোরিকশা বন্ধ না করা হলে দুরপাল্লার বাস চালিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা পেটের ভাত যোগাতে না পারলে বাস চালিয়ে কি করবে। এব্যপারে মালিক শ্রমিক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক শংঙ্কর শুভ রায় বলেন, আমরা অচিরেই শ্রমিকদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে প্রশাসন অতি শীঘ্রই অটোরিকশা বন্ধ না করলে এই রুটটি চালু রাখা আমাদের জন্য কষ্ট সাধ্য হবে।
এ ব্যপারে জানতে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, বাস বন্ধের ব্যাপারে মালিক-শ্রমিক কোন পক্ষই আমার সাথে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করে নাই। তবে বিষয়টি আমি দেখছি ,যাতে অতি শীঘ্রই বাস চলাচল চালু করা যায়।