হবিগঞ্জে এডিএম, ডাক্তার ও নার্সসহ ৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২০, ১২:৪৬:০৫
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আজ শনিবার পর্যন্ত জেলায় মোট ৪৬জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আইইডিসিআর ও সিলেট থেকে পাঠানো রিপোর্টে এ তথ্য পাওয়া গেছে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নাজির, গাড়ী চালক, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, নারী ও শিশুসহ ৪৬ জন আক্রান্ত বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিসের দুই কর্মকর্তা জানান, আজ শনিবার আইইডিসিআর থেকে হবিগঞ্জে পাঠানো ২০জনের করোনা পজেটিভ বলে রিপোর্ট এসেছে। এরমধ্যে জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৪জন রয়েছেন। বাকিরা স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও ব্রাদার রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা করোনা আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানের মোবাইলে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সূত্র আরো জানায়, ডাক্তার নার্স করোনা আক্রান্ত হওয়ায় হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল লক ডাউনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল জানান, লকডাউনের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এখনো হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে জানাব।
এদিকে, শুক্রবার মধ্যরাতে সিলেট থেকে পাঠানো রিপোর্টে ৫ রোগিদের মধ্যে চুনারুঘাট হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারি, চা বাগান শ্রমিকের ৫ বছরের শিশু রয়েছেন। ওই শিশুকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন রোগি মারা যাওযায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ডাক্তার, স্বাস্থ্য সহকারি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় শনিবার থেকে চুনারুঘাট উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ৭ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে হবিগঞ্জ শীর্ষে রয়েছে। এর আগে ডাক্তার নার্স করোনা আক্রান্ত হওয়ায় লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্ধ করা হয়। গত ১০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জ থেকে আসা মাইক্রোবাস চালক মোফাজ্জল হবিগঞ্জে প্রথম করোনা রোগি হিসেবে ধরা পড়েন। ডাক্তার ছাড়া সকল রোগিকে হবিগঞ্জ হাসপাতালের আইসোলেশনে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, করোনা উপসর্গ নিয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক ফেরদৌস মিয়া (৩০) আজ শনিবার সকালে মারা গেছেন। নিজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান তাজউদ্দিন জানান, ফেরদৌসের বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। বাড়িগুলোর দরজায় তালা দেওয়াসহ সামনে টানানো হয়েছে লাল পতাকা। তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হবে। চেয়ারম্যান জানান, গত ২১ এপ্রিল রাতে ফেরদৌস শ্বাসকষ্ট নিয়ে হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন রাতেই তাকে সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আজ শনিবার সকালে তিনি মারা যান। পরিবারের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ফেরদৌস আগেই শ্বাসকষ্ট রোগি ছিলেন। তবে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি ওই তিনটি বাড়ি লকডাউন করে এসেছেন। ফেরদৌসকে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হবে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন রুবেল জানান, ফেরদৌস করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি-না রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। তার উপসর্গগুলো সন্দেহজনক হওযায় তার বাড়ি ও তিতখাই গ্রামে শ্বশুর বাড়িও লকডাউন করা হয়েছে। কারণ, অসুস্থ হওয়ার কিছুদিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন।