স্পেনে লকডাউন শিথিলে বেড়েছে সংক্রমন, মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়িয়েছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২০, ৪:৩৭:৩৫
করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা স্পেনে ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশটিতে লকডাউন শিথিলের পর হঠাৎ বেড়ে গেছে সংক্রমনের হার। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ হাজার ১৫৪জন।
এরপরই আছে ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশ ইতালি। সেখানে এ পর্যন্ত মারা গেছে ২২ হাজার ৭৪৫ জন। ইতালির পরই করোনায় মৃতের সংখ্যায় এগিয়ে আছে স্পেন। দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ২০ হাজার ২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছে ৬৮৭ জন।
মৃতের সংখ্যায় ৩ নাম্বারে থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যায় স্পেনের অবস্থান দুই নম্বরে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৮৯১ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৯৭ জন।
এছাড়া স্পেনে বর্তমানে ৯৬ হাজার ৪০ জন শনাক্ত রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৮ হাজার ৬৬৯ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি ৭ হাজার ৩৭১ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিউইতে রয়েছে।
এদিকে স্পেনে লকডাউন শিথিলের পর দেশটিতে আক্রান্তের হার আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ১৩ এপ্রিল লকডাউন আংশিক শিথিল হওয়ায় দেশটিতে মানুষ কাজে ফিরছেন।যদিও গত সপ্তাহেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সামান্য কম দেখে কোনো দেশ যদি বিধিনিষেধ তুলে নেয়, তাহলে ভাইরাসটি আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে।
লকডাউন শিথিলের দিন ১৩ এপ্রিল আক্রান্ত হয় ৩২৬৮ জন, পরদিন ১৪ এপ্রিল ৩৯৬১ জন, ১৫ এপ্রিল ৬ হাজার ৫৯৯ জন, ১৬ এপ্রিল ৪ হাজার ২৮৯ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯১ জন। যাতে দেখা যায়, লকডাউনের পর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে।
করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি যেসব দেশ আক্রান্ত হয়েছে সেগুলোর অন্যতম স্পেন। দেশটি আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
১৩ এপ্রিল সোমবার অবকাঠামো ও শিল্প-কারখানাগুলো সচল করতে প্রায় এক মাস পর লকডাউন শিথিল করে স্পেন। অবকাঠামো ও ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের মতো যেসব খাতের কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করতে পারেন না তাদের কাজে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তবে দোকানপাট, বার ও রেস্তোরাঁসহ জরুরি নয় এমন সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ থাকবে বলে খবরে বলা হয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা দেখছি না।
অন্যদিকে স্পেনে ২৭ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক কর্মকর্তা।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) স্পেনের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্রের পরিচালক ফার্নান্দো সাইমন জানান, মহামারি মোকাবিলা করতে গিয়ে বহু সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে আবারও কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৮ হাজার ৬৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৪১ জন।
এছাড়া বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২ লাখ ৫০ হাজার ১১৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৯৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৭ জন। সবমিলিয়ে, বর্তমানে ১৫ লাখ ২৪ হাজার ৩০১ জন শনাক্ত রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৮ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আর ৫৬ হাজার ৯৬৩ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছে।