
বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিদর্শক (জিআইবিআর) অসীম কুমার তালুকদার কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তাঁর কাছে যাত্রীদের সেবার মান ও কুলাউড়া রেলস্টেশনের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবির কথা উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি লিখিত আবেদন তুলে দেন কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ এর কাছেও পৃথক আরেকটি আবেদন করা হয়। যার অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়।
সোমবার (৯ মার্চ) সকালে একটি বিশেষ ট্রেনে প্রায় ৫০ সদস্যের একটি টিম নিয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন পরিদর্শনে আসেন রেলপথ পরিদর্শক অসীম কুমার তালুকদার। তাঁর সাথে ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীন, চীফ অপারেটিং সুপারেন্টেড মো. নাজমুল ইসলাম, প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মো. শাহনেওয়াজ, প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিনসহ পূর্বাঞ্চলের সকল বিভাগের প্রধানগণ।
পরিদর্শনকালে তিনি কুলাউড়া রেললাইন, প্ল্যাটফর্ম, লোকো শেড, রেলওয়ে হাসপাতাল, রেস্ট হাউস, যাত্রী বিশ্রামাগার, প্ল্যাটফর্ম শেডসহ যাত্রীদের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার খোঁজখবর নেন। পরে তিনি স্থানীয় রেলবিভাগের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীসেবার মান ও সমস্যার বিষয়ে জানতে চান। তখন তাঁর কাছে বিভিন্ন সমস্যা ও দাবির কথা তুলে ধরা হয়। রেলের লোকো শেড পরিদর্শনে গিয়ে কিছু অনিয়ম দেখতে পান। সেখানে রেজিস্টারি খাতায় ২ মাসে মাত্র ২ বার ট্রেনের ইঞ্জিন চেক করার তথ্য দেখতে পান। এছাড়া এই রুটে বিভিন্ন সময় ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগকে আরো সতর্ক থেকে কাজ করার কঠোর নিদের্শনা দেন।
লিখিত আবেদনের পাশাপাশি এসময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী সকল ট্রেনের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি, স্টেশনের আধুনিকায়ন, কুলাউড়ার জন্য আলাদা কোচ বৃদ্ধি, ট্রেনের প্রতিটি বগিতে বর্ণমালার সংযুক্তিকরণ, যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগারে বন্ধ থাকা বাথরুম সংস্কার, প্লাটফর্মের বাথরুমের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্তি, পানীয় জলের ব্যবস্থা, টিকেট কালোবাজারি বন্ধ, কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলা, গণশৌচাগার স্থাপন, স্টেশনের প্রবেশমুখে অবৈধভাবে টুল আদায় বন্ধ ও ইজারাবাতিল, রেলের পরিত্যাক্ত কোয়ার্টারে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ, ট্রেনের সময়সূচীর জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন, রেলওয়ে হাসপাতালে ডাক্তার বৃদ্ধি, রেলওয়ে রিক্রিয়েশন ক্লাব সংস্কার, পাবলিক সচেতনতার জন্য প্লাটফর্মসহ আঙ্গিনা পরিস্কারসহ বিভিন্ন সমস্যা ও দাবির কথা তুলে ধরেন পরিদর্শকসহ উপস্থিত রেল কর্মকর্তাদের কাছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইত্তেফাক প্রতিনিধি সুশীল সেনগুপ্ত, আমাদের সময় প্রতিনিধি খালেদ পারভেজ বখ্শ, বিজনেস বাংলাদেশ প্রতিনিধি ময়নুল হক পবন, যুগান্তর প্রতিনিধি আজিজুল ইসলাম, সাংবাদিক আতিকুর রহমান আখই, সবুজ সিলেট প্রতিনিধি শরীফ আহমেদ, সময়ের আলো প্রতিনিধি সাইদুল হাসান সিপন, কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি মাহফুজ শাকিল।
স্টেশনের সমস্যা ও দাবি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের রেলপথ পরিদর্শক (জিআইবিআর) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, পরিদর্শনে এসে সকল বিষয় নোট করে নিয়েছি। রেলবিভাগের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য ধারাবাহিকভাবে কার্যত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি দপ্তরের কাজের বিষয় ও সমস্যাগুলো রিপোর্টের মাধ্যমে রেলমন্ত্রণালয় ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কাছে জানানো হবে।