লাল তালিকার ঝুঁকি কাটলো, ভিসা হয়েছে ৮৫ ভাগ হজযাত্রীর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুন ২০২৩, ১০:৪০:৫৭
হজ যাত্রীদের ভিসা জটিলতার কারণে সৌদি আরবের লাল তালিকায় পড়ার যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছিলো তা কাটিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮৫ ভাগ হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম।
বুধবারের মধ্যে মোট হজযাত্রীর ৮০ শতাংশের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে বাংলাদেশকে লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছিলো সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। তবে ৮০ ভাগের বেশি হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় এখন আর এ ঝুঁকি থাকছে না।
হাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৮৫ ভাগেরও বেশি হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া আমরা শেষ করতে পেরেছি। ফলে আপাতত লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঝুঁকি নেই।’
এদিকে, বুধবার হাবকে দেয়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতেও ৮০ ভাগ হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার তথ্য জানানো হয়।
গত সোমবার জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, রাজকীয় সৌদি সরকারের হজ্জ ও ওমরা মন্ত্রণালয় হতে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৭ জুনের মধ্যে ৮০ শতাংশ ভিসা সম্পন্ন করতে হবে।
‘কয়েকটি দেশের ভিসা প্রাপ্তির সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম বিধায় ৭ জুন এর মধ্যে ভিসা ৮০ শতাংশ সম্পন্ন না হলে সংশ্লিষ্ট হজ্জ অফিসকে লাল তালিকাভুক্ত করা হবে এবং এসব কিছুর যাবতীয় দায়ভার সেসব হজ্জ অফিসকে বহন করতে হবে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮০ শতাংশ ভিসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হজ্জ কার্যক্রম পরিচালনাকারী হজ্জ এজেন্সীগুলোকে জরুরীভিত্তিতে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
মো. জহিরুল ইসলামের চিঠির সাথে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক কোপারেশান বিভাগের প্রতিনিধি আল-হাসান আল-মানাখেরাহের সই করা একটি চিঠি সংযুক্ত করা হয়।
সৌদি প্রতিনিধির ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কিছু কিছু দেশের হজ অফিস লাল তালিকাভূক্ত হয়েছে। ফলে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও কার্যক্রম সম্পাদনে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এসব কিছুর যাবতীয় দায়ভার সেসব হজ অফিসকের উপরই বর্তাবে।
‘আসছে আগামী ৭ই জুনের মধ্যে ভিসা ইস্যুর শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পাদন করা চাই। এর ব্যত্যয় ঘটলে সৌদি হজ মন্ত্রণালয় যে-কোনো ধরণের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।’
সময় মতো ভিসা ইস্যু না করায় এবার অনেকেরই হজযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হজযাত্রীর অভাবে এখন পর্যন্ত ৬টি ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানকে।
এ অবস্থায় এখন পর্যন্ত কোনো ভিসা ইস্যু করতে না পাড়ায় ৯০ টি হজ এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ২১ মে শুরু হয় এ মৌসুমের হজ ফ্লাইট। এবছর সৌদি আরবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন। এদের মধ্যে ৬১ হাজার ১১১জনকে বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বাকিরা যাবেন সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ও নাস এয়ারে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী ২৭ জুন। হজ অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৫৪টি ফ্লাইটে মোট ৫৮ হাজার ৬২৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গিয়েছেন। এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে মারা গেছেন ৫ জন।