যত দিন সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে চাই: শিক্ষামন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ৬:৫৭:৪৭
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এখনই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছি না। যত দিন সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোল রাখতে চাই। জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আজ (রবিবার) আমাদের বৈঠক আছে। আমরা পুরো অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখব।
রবিবার দুপুরে সাভারের দত্তপাড়া এলাকায় অবস্থিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নবম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, যেহেতু নতুন করে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়ছে তাই আমাদের সবাইকে বেশি সতর্ক হতে হবে। সারা বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখনো বাংলাদেশ অত্যন্ত ভালো অবস্থানে থাকায় আমরা ভেবেছিলাম করোনা হয়তো চলেই গেছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার সবাইকে সতর্ক হতে বলেছেন। তাই আমরা বিশ্বাস করি সবাই আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনার সংক্রমণ বিষয়ে তিনি বলেন, একদিকে যেমন আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না, আরেক দিকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ জন্য যদি প্রয়োজন হয় তাহলে নিশ্চয় আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করব।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ বছরের অধিক বয়সীদের টিকা দেওয়া যাচ্ছে, কিন্তু এর কম বয়সীদের টিকা প্রদানের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাজেই ১২ বছরের ওপরে যারা আছে তাদের সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনার টিকা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
অন্যদিকে নতুন পাঠ্য বইয়ের মধ্যে ভুল থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কোথাও কোনো ভুল থাকলে তা আমরা অবশ্যই সংশোধন করব। অনেক বই হয়, একদম ভুল হলে সেটা ভুলই। ভুল হলে তার জন্য কোন এক্সকিউজের দরকার নাই। ভুল হলে সেই ভুল আমাদের অবশ্যই সংশোধন করতে হবে।
এর আগে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দীপু মনি বলেন, সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা নির্ভর নির্ভর, সনদ সর্বস্ব প্রায়। আমরা মনে করি মূল্যায়ন করা মানেই শুধু পরীক্ষা নেয়া। ফলাফল যত ভালো হবে সেটাই মূল্যায়নের চাবিকাঠি। যদি তাই হবে তাহলে এত সনদধারী বেকার কেন? নিশ্চয়ই এটি আমাদের কাম্য নয়। সে জন্য আমরা আমাদের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একেবারে প্রাক-প্রাথমিক থেকে একটি পরিবর্তন নিয়ে এসেছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে। আমরা প্রাক-প্রাথমিক থেকেই শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের শিশুরা জানতে চাইবে, শিখতে চাইবে। সে জন্য সব পরিবারের মধ্যে, আমাদের মধ্যে মানসিক ধরনের পরিবর্তন আনা, মানসিকতার পরিবর্তন আনা জরুরি। আমরা সমস্যার কথা বলি কিন্তু সমস্যা সমাধানের কথা বলি না। এটা খুব জরুরি।
এবারের সমাবর্তনে মোট ১২১৬৮ শিক্ষার্থীকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন গ্র্যাজুয়েটকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে এবারই প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্বর্ণপদক’ এবং ‘শেখ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সবুর খান, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুল হক মজুমদার, কোষাধ্যক্ষ মো. মমিনুল হক মজুমদার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. একেএম হকসহ বিভিন্ন বিভাগের ডিন।
এ ছাড়া সমাবর্তনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহিদুল্লাহ ও ভারতীয় নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী।