অবশেষে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে যুক্ত হল জাতিসংঘ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ৯:৫০:১১
এক সময় বিরোধিতা করলেও অবস্থান পরিবর্তন করে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হল জাতিসংঘ।
শনিবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এবং বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ফন ডার ক্লাউ সহই করেন এই দলিলে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান প্রধান অতিথি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সচিব মোহসীন বলেন, “জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ কর্তৃক কক্সবাজারের ন্যায় ভাসানচরেও মানবিক সহায়তা পরিচালিত হবে। বেসামরিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গা নাগরিকদের খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়ঃনিস্কাশন, চিকিৎসা, মিয়ানমার কারিকুলাম ও ভাষায় এফডিএমএনদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা হবে ভাসানচরে, যে কাজটি এতদিন সরকার একাই করে আসছিল।
বাংলাদেশ সরকার এখানে বসবাসরত এফডিএমএন ও কর্মরত জাতিসংঘ এবং এর সহযোগী সংস্থা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখাশুনা করবে।
এছাড়া ভাসানচরে এফডিএমএনদের বসবাসের কারণে পার্শ্ববর্তী স্থানীয় এলাকা ও জনগণের উপর যদি প্রভাব পড়ে, তা নিরসনে জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর বলেন, জনসংখ্যার অতি ঘনবসতি ও পরিবেশের ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভাসানচরে ১৪৪০টি আশ্রয়গৃহ ও ১২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৭২৪ পরিবারের ১৮ হাজার ৮৪৬ জনকে সেখানে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে আরও প্রায় ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনাও জানান প্রতিমন্ত্রী।
ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সহজ হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে বলেন, “ভাসানচর কিংবা কক্সবাজারে বলপূর্বক ব্যস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের থাকার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা সাময়িক। আমাদের মূল লক্ষ্য মিয়ানমারের এ সকল বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন।”