জামায়াত নেতার মেয়েকে ‘ধর্ষণচেষ্টা’, শিবির নেতা কারাগারে
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ আগস্ট ২০২১, ১১:৪০:৫২
ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীর সোনাগাজীতে জামায়াত নেতার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় শিবির নেতা হামিদুর রহমান আজাদকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩০ আগস্ট) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, রবিবার (৩০ আগস্ট) রাতে বগাদানা ইউনিয়নে ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে জন্মদিনে উপহার দিতে গিয়ে রাতে তাদের ঘরের একটি কক্ষে লুকিয়ে থাকেন হামিদুর। রাত ১টার দিকে ওই ছাত্রীর পিতা জামায়াত নেতা ও তার ছেলে টের পেয়ে তাকে আটক করে। পরে বেধড়ক পিটিয়ে ঘরের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এর একটি ছবিও ফেসবুক শেয়ার করেন জামায়াত নেতার ছেলে। সেখানে লেখা হয়েছে, স্বর্ণ চোর রাত ৩টায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছে। পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মুহূর্তের মধ্যে সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ হামিদুরকে তাদের হেফাজতে নেয়।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে হামিদুর রহমান আজাদকে ও খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ায় ওই ছাত্রীর ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা হামিদুরকে আসামি করে সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত হামিদুর একই উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের চরবদরপুর গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রশিবির উত্তর শাখার সাবেক সভাপতি। বর্তমানে জেলা ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর সুবাদে অভিযুক্তের সঙ্গে আমার পরিবারের সখ্যতা গড়ে ওঠে। এ সুযোগে সে আমার কিশোরী মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বিষয়টি আমার পরিবার জানতে পেরে তাকে প্রাইভেট পড়ানো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলে সে ক্ষিপ্ত হয়। রবিবার গভীর রাতে সে আমার বাড়িতে চুপিসারে প্রবেশ করে মেয়ের কক্ষে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে শারীরিক নির্যাতন করে। পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে তাকে আটক করলে স্থানীয় জনতা জানতে পেরে তাকে রশি দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত হামিদুরের পিতা বেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, প্রাইভেট পড়ানোর সূত্র ধরে তার ছেলের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রোববার মেয়েটির জন্মদিন ছিল। মেয়েটি বিষয়টি তার ছেলেকে জানালে সে দুই প্যাকেট লজেন্স ও একটি কলম উপহার হিসেবে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। রাতে সেখানে খাওয়া দাওয়াও করে। কিন্তু গভীর রাতে তার ছেলেকে নির্মমভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আহত করে। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে কথিত স্বর্ণ চুরির অভিযোগ এনে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। অথচ তাদের ঘরের দরজা ভাঙা বা স্বর্ণ চুরির কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাই তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই ছাত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।