রাণীশংকৈলে দেখা গেল ‘সাপের ভালোবাসা’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০২১, ৬:৪৮:১৩
দুটি সাপের শারীরিক ভালোবাসা বা যৌনমিলনকে সাধারণত ‘শঙ্খ লাগা’ বলা হয়। সাপের এই ভালোবাসার দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না। তবে বিরল এ দৃশ্যের দেখা মিলেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সুন্দরপুর এলাকায়।
শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই এলাকার একটি ফসলি জমিতে দুটি দাঁড়াশ (স্থানীয় ভাষায় দারাজ) সাপের ‘শঙ্খ লাগা’ দৃশ্য দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
সুন্দরপুর এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় সংবাদকর্মী হুমায়ুন কবির জানান, সাপের ওই মিলন সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। দাঁড়াশ প্রজাতির সাপ দুটি লম্বায় ছিল চার থেকে পাঁচ ফুট। শঙ্খ লাগা অবস্থায় নিজেদের পেঁচিয়ে অনেক উঁচুতে লাফালাফি, মারামারি ও একে অপরকে কামড় দিতে দেখা যায়।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল গাফফার জানান, সাপের ‘শঙ্খ লাগা’ একটি সাধারণ ও প্রাকৃতিক বিষয়। মানুষ বা অন্য প্রাণীর যেমন যৌনমিলন হয়, সাপও তেমনিভাবে প্রজননের জন্য মিলন ঘটায়।
তিনি বলেন, ‘সাপের নির্দিষ্ট সময় থাকে। তখন তাদের প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, মিলনে উদ্দীপ্ত করে এবং প্রেম বা ভালো লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। খাদ্যনিরাপত্তা, তাপমাত্রা এবং সঙ্গীর সহজলভ্যতা—এসবের ওপর সাপের মিলন নির্ভর করে। সাধারণত বর্ষাকাল এজন্য অনেকটা উপযুক্ত সময়। তাই এই সময়ই সাপের শঙ্খ বা মিলন বেশি হয়।’
‘প্রজননের ঋতু ছাড়াও অন্য সময়ে তিন বা তার বেশি সাপের শঙ্খ লাগে এবং সবচেয়ে লক্ষণীয়, দুটি পুরুষ সাপেও শঙ্খ লাগে। আসলে নিছক খেলার ছলে কিংবা পৌরুষ জাহির করার জন্যও মারামারি বা শঙ্খ লাগে।’
‘সাপ যৌনমিলনের আগে বা মিলনের সময় প্রজননভাব ও অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় লাফালাফি, পরস্পর জড়াজড়ি, মারামারি আর কামড়া-কামড়ি করে। এতে অনেক সময় দেহ কেটে-ছিঁড়ে যায়’— বলেন আব্দুল গাফফার।