নিহত রায়হানের মায়ের অনশন ভাঙালেন মেয়র আরিফ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০২০, ৮:২৫:৫১
পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের মায়ের আমরণ অনশন ভাঙালেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে রবিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আমরণ অনশনে বসেন পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের মা সালমা বেগমসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
আজ বিকেল ৫টার দিকে হঠাৎ এই অনশন রূপ নেয় তীব্র আন্দোলনে। রায়হানের পরিবারের সদস্যরা এবং আখালিয়া এলাকার বাসিন্দারা বন্দরবাজারের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এসময় তিনি রায়হানের মাকে সান্ত্বনা দিয়ে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। পরে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে অবরোধ তুলে দেন।
উল্লেখ্য, রায়হান নামের ওই যুবককে গত ১০ অক্টোবর সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাাঁড়িতে আটকে রেখে ভয়াবহ নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পান রায়হানের বাবা। ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে উদ্ধারের অনুরোধও করেন তিনি। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। কিন্তু, ততক্ষণে নির্যাতনের ভয়াবহতায় গুরুতর আহত হন রায়হান।
এদিকে, ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে রায়হানকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন ওই ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মৃত্যু হয় রায়হানের। হাসপাতালে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে রায়হানের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান। তার হাতের নখগুলোও ওপড়ানো ছিল। তবে পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। যদিও সিটি করপোরেশনের ক্যামেরা ফুটেজে এর কোনও প্রমাণ মেলেনি।
এ ঘটনায় হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। এরপর বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে ঘটনার পর থেকে এসআই আকবর পলাতক রয়েছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।