৫০ দিন পর ফের লন্ডনের ফ্লাইট নামলো সিলেটে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২০, ২:২৩:০৩
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা লন্ডন-সিলেটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট ফের চালু হয়েছে।
আজ সোমবার (১০ আগস্ট) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে বিজি-২০২ ফ্লাইটটি সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানের সিলেট জেলা ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বিমানটিতে সব মিলিয়ে ১১৬ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে সিলেটের ৬৫ ও ঢাকার ৫১ জন যাত্রী ছিলেন। যে সব যাত্রী করোনাভাইরাস নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছেন, তারা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাবেন। যাদের সার্টিফিকেট নেই, তাদেরকে আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে।”
তিনি জানান, বিমানটি এ বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা অবস্থানের পর ঢাকায় উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। একই বিমানে সিলেট থেকে আরও ৩৪ জন যাত্রী ঢাকায় গেছেন বলে জানান তিনি।
এ সময় বিমানবন্দরে বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধি ছাড়াও আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন জানান এ বিমান কর্মকর্তা।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, “সিলেটে খাদিম বিআরডিটিআইকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে, বিমানে আসা যেসব প্রবাসী কোয়ারেন্টিন সেন্টারে থাকতে আগ্রহী নন, তাদেরকে নিজ খরচে হোটেলে থাকতে হবে।”
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের একটি পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার আমরা ফরচুন গার্ডেন হোটেল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম।”
আটাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্টের সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল জানান, প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল ফরচুন গার্ডেন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ মৌখিক চুক্তি হয়েছে।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী গ্রেটার সিলেট ডেভেলপম্যান্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল (জিএসসি) ইন ইউকে’র সাউথ ইস্ট রিজিওনের ট্রেজারার সুফি সুহেল আহমদ জানান, লন্ডন থেকে সিলেটে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ায় প্রবাসীরা খুশি। তিনি জানান, ফ্লাইট বন্ধ হবার সিদ্ধান্তে প্রবাসীরা যারপরনাই ক্ষুব্ধ ছিলেন।
বিমান সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২১ জুন থেকে লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়। এরপর ২৫ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিমানে যারা লন্ডন থেকে সিলেট আসবেন ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে আসতে হবে সিলেটে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও সিলেটে আইসোলেশন সেন্টার না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বিমান এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায়ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিমানের এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালুর দাবিতে গ্রেটার সিলেট ডেভেলপম্যান্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। এ নিয়ে সিলেটেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও সিলেটের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালুর দাবি জানানো হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে।
এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় বিস্তৃত আলোচনা হয় এবং ফ্লাইট ফের চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রোকসিন্দা ফারহানা স্বাক্ষরিত পত্রে সিলেটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট অবতরণের বিষয়ে আনুষাঙ্গিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। পাশাপাশি কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওসমানী বিমানবন্দরকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করা হয়েছে।