সংসদে এবার ৩২ আইনজীবী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ৮:১৮:৪৯
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩২ জন আইনজীবী সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ থকে নির্বাচিত হয়েছেন ২৬ জন আর জাতীয় পার্টি থেকে দুই জন। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন চার জন।
নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের হলফনামায় ২৯ জন পেশা হিসেবে আইনজীবী উল্লেখ করেছেন। তবে পেশা হিসেবে আইনজীবী উল্লেখ না করলেও আরও কয়েকজন আইনজীবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সারাবাংলার অনুসন্ধানে সবমিলিয়ে ৩২ জন আইনজীবী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত আইনজীবী সংসদ সদস্যদের মধ্যে থেকে স্পিকার, ডেপুট স্পিকার ছাড়াও পাঁচজন পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- মো. নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-২ (বোদা ও দেবীগঞ্জ); মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ি); মো. মতিয়ার রহমান, লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর); শিরীন শারমিন চৌধুরী, রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ); মো. বিপ্লব হাসান, কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, চর রাজিবপুর ও চিলমারী); উম্মে কুলসুম স্মৃতি, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী); নিজাম উদ্দিন জলিল (জন), নওগাঁ-৫ (নওগাঁ সদর); জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-৩ (সিংড়া); মো. শামসুল হক টুকু, পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া); শ্রী বীরেন শিকদার, মাগুরা-২ (মহাম্মদপুর, শালিখা ও মাগুরা সদর); মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর, ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর ও কাঠালিয়া); আমির হোসেন আমু, ঝালকাঠি-২ (ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি); শ. ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানি); নিলুফার আনজুম পপি, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর)।
আরও রয়েছেন- মো. কামরুল ইসলাম, ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ উপজেলার একাংশ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৫, ৫৬, ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং সাভার উপজেলার একাংশ); জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা-১৩ (ঢাকা উত্তর সিটির ওয়ার্ড- ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪); নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, নরসিংদী-৪ (মনোহরদী ও বেলাব); রনজিত চন্দ্র সরকার, সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ); ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং); মো. আবু জাহির, হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও সায়েস্তাগঞ্জ); আনিসুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া); মো. সেলিম মাহমুদ, কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) মুজিবুল হক, চাঁদপুর-১ (কচুয়া); দীপু মনি, চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর); নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও লক্ষীপুর সদর উপজেলার একাংশ); মহিবুল হাসান চৌধুরী চট্টগ্রাম-৯ (চট্টগ্রাম সিটির ওয়ার্ড ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫)।
জাতীয় পার্টি থেকে দুইজন আইনজীবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- মো. মজিবুল হক, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল); আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চট্টগ্রাম-৫ (চট্টগ্রাম সিটির ওয়ার্ড ১ ও ২)।
আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চার জন আইনজীবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- মো. ওমর ফারুক, নওগাঁ-৬ (আত্রাই ও রানীনগর); মো. আবুল কালাম, নাটোর-১ (লালপুর ও বাগাতিপাড়া); মো. সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া); সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট)।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী চলতি সংসদে ২৯৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশের পেশাই (৬৬.৮৯% বা ২০০ জন) ব্যবসা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই হার শতকরা ৬৫.৯২% (১৪৭ জন), জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার শতকরা ৮১.৮২% (৯ জন), অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে ৬৬.৬৭% (২ জন) এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৬৭.৭৪% (৪২ জন)। নবনির্বাচিত ২৯৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৯ জন (৯.৩৯%) আইনজীবী (প্রকৃত তথ্য হবে ৩২ জন এবং ১০.৬৭ শতাংশ)। এই ৩২ জনের মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত।
সুজনের তথ্য মতে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল শতকরা ৫৮.৭১% (১১৪২ জন); নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার দাঁড়িয়েছে ৬৬.৮৯% (২০০ জন)। প্রতিদ্বন্দ্বিতার তুলনায় ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত হওয়ার হার ৮.১৮% বেড়েছে। নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৬৯ জনের (৮৯.৯৭%) সম্পদ কোটি টাকার উপরে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই হার শতকরা ৯৫.০৬% (২১২ জন)। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার শতকরা ৯০.৯১% (১০ জন), অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১০০% (৩ জন) এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৭০.৯৬% (৪৪ জন)। নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক রয়েছেন নয় জন।