কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ করে শুয়ে পড়েন দ্বীপের বাসিন্দারা
সেন্টমার্টিনে পর্যটন সীমিত করার প্রতিবাদে কক্সবাজারে অবরোধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৪:২৮
কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত ও অবস্থান সীমিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর ডলফিন মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা।
এর আগে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের ব্যানারে মানববন্ধন, মিছিল-সমাবেশ করা হয়।
মানববন্ধন ও সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, অতীতের কোনো সরকার দ্বীপ নিয়ে এমন তালবাহনা করেনি। কিন্তু বর্তমান সরকার পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার নামে পর্যটন শিল্প ধংস করে দ্বীপ নিয়ে পাঁয়তারা শুরু করেছে। সরকার এমন হটকারি সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে দ্বীপের মানুষ রাস্তা ছাড়বে না।
কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেঁস্তোরা ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সমন্বয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।
কলাতলী মোড়টি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা এবং প্রবেশমুখ হওয়ায় অবস্থান কর্মসূচির কারণে চতুর্দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় সকাল থেকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ায় পর্যটক ও স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়েন। পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বললেও তারা কর্মসূচি পালনে অনড় থাকেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ী মাওলানা আব্দুর রহমান খান, মোহাম্মদ আলম, সরওয়ার কামাল, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) একাংশের সভাপতি রেজাউল করিমসহ অনেকে।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ সম্পর্কে তারা সম্যক অবগত। পরিবেশ রক্ষা দ্বীপবাসীকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে। কিন্তু সরকার পরিবেশ রক্ষার দোহাই দিয়ে পর্যটক গমনাগমনে বিধি-নিষেধ আরোপ করে পর্যটন শিল্প ধংসের পাঁয়তারা করছে। এতে দ্বীপবাসীর জীবন-জীবিকাসহ পর্যটনের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে।
ইতোমধ্যে দ্বীপের মানুষের মাঝে অভাব-অনটনের পাশাপাশি অনেকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন বলে জানান তারা।
এদিকে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেছেন, নভেম্বর মাস থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে। সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জটিলতায় এখনও সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। এতে চলতি মৌসুমে দ্বীপটিতে পর্যটক যাতায়াত নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে জীবন-জীবিকা নিয়ে চরম হুমকির মুখে দ্বীপবাসীসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ৩,৫০,০০০ মানুষ।