শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে বাবাকে খুন!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০২২, ১০:৫৫:৩৫
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুরুজ আলীকে (৭০) হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ছেলে সুজাত মিয়া (২৭)।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুজাত মিয়া।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হওয়ায় ও তালাকের হুমকি পেয়ে তাদের ফাঁসাতে সুজাত মিয়া এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
গত ৬ জুন রাত ২টার দিকে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্ব্বপুর গ্রামে সুরুজ আলীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের রাতে খাবার খেয়ে সুরুজ আলী ছোট ছেলে সুজাত মিয়ার সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সুজাত মিয়া বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন।
পরে প্রতিবেশীদের সুজাত মিয়া জানান, একদল ডাকাত তার বাবাকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
হত্যার রহস্য উদঘাটনে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ঘটনার পরদিন নিহতের মেয়ে খোদেজা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে পুলিশ সন্দেভাজন হিসেবে সুজাত মিয়াকে গ্রেফতার করে গত বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুন জানান, রিমান্ডে আনার পর থেকে আসামি একেক সময় একেক কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার তিনি তার বাবাকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
তিনি আরও জানান, আসামির স্ত্রী এক বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তবে তিনি তার স্বামীর কাছে টাকা না পাঠিয়ে নিজের বাবার বাড়িতে পাঠান। এ নিয়ে সুজাত মিয়ার সঙ্গে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরোধ শুরু হয়। তাদের ফাঁসাতে নিজের বাবাকে গলা কেটে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
ওসি মিজানুর রহমান জানান, পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করার পর ঘাতককে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দাসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।