সাংবাদিকদের সুরক্ষায় ‘জাতিসংঘের কর্মপরিকল্পনা সংশোধনের আহ্বান’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুন ২০২২, ৬:৫৭:২৪
সাংবাদিকদের সুরক্ষায় জাতিসংঘ কর্তৃক প্রণীত কর্মপরিকল্পনা (ইউএনপিএ) সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘আর্টিকেল নাইনটিন’।
আর্টিকেল নাইনটিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে অনুষ্ঠিত ইউএনপিএ-বিষয়ক ‘সাউথ এশিয়া রিজিওনাল কনসালটেশন’-এ সংস্থাটি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে।
গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য একটি অবাধ-নিরাপদ পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তি মোকাবিলায় ২০১২ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনস প্ল্যান অব অ্যাকশন (ইউএনপিএ) গৃহীত হয়।
ইউএনপিএ প্রণয়নের দশম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩১ মে থেকে ১ জুন কাঠমাণ্ডুতে পরামর্শ সভা হয়। পরামর্শ সভার আয়োজক ইউনেসকোর নয়াদিল্লি ও কাঠমাণ্ডু কার্যালয়। সহযোগিতায় ছিল নেপালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও নেপালি সাংবাদিক ফেডারেশন।
পরামর্শ সভায় আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ইউএনপিএ প্রণীত হয়েছিল ১০ বছর আগে। তারপর নাগরিক সাংবাদিকতার প্রবর্তন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিকাশ, অনলাইন মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে আইনি কাঠামো প্রণয়ন হয়। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের মতো বিভিন্ন ঘটনায় সাংবাদিকদের জন্য বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট অনেকটা পরিবর্তিত হয়েছে। এসব কারণে ইউএনপিএ পর্যালোচনা করে তা সংশোধনের মাধ্যমে সময়োপযোগী করার এখনই সঠিক সময়।
পরামর্শ সভায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারক, আইন বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকে অংশ নেন। সভায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউএনপিএর বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়।
পরামর্শ সভায় ইউএনপিএর প্রতিরোধ, সুরক্ষা ও বিচারের সম্মুখীন করার ক্ষেত্রে সাফল্যের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের ওপর আলোকপাত করা হয়। একই সঙ্গে পরামর্শ সভায় আলোচকেরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা মানুষের জানার অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও সঠিক তথ্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ইউনেসকোর দক্ষিণ এশীয় যোগাযোগ ও তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা হেজকিয়েল দলামিনি বলেন, এ অঞ্চলে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় গত এক দশকে ইউএনপিএর সাফল্য ও চ্যালেঞ্জগুলো খতিয়ে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এ পরামর্শ সভা, যা কর্মপরিকল্পনার বর্তমান অবস্থা মূল্যায়নে সহায়ক হবে।
পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণকারীদের আলোচনায় উঠে আসে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সাংবাদিকদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও চ্যালেঞ্জ একই ধরনের।
এগুলো হচ্ছে- দায়মুক্তি, হুমকি, ভীতি প্রদর্শন, সেলফ সেন্সরশিপ, আইনি হয়রানি, শারীরিক আক্রমণ, অনলাইন হয়রানি, ট্রলিং, মানসিক স্বাস্থ্যকে বাধাগ্রস্ত করা, প্রতিরোধ-প্রতিকারের ক্ষেত্রে কার্যকর সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাব। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো, সাংবাদিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অধিকার লঙ্ঘনের প্রামাণ্য ডকুমেন্টেশন, দায়মুক্তির বিরুদ্ধে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অ্যাডভোকেসির পরামর্শ দেয়া হয়।