নারায়ণগঞ্জে পত্রিকা অফিসে হামলা, সম্পাদককে গুলির হুমকি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৯:৪৯:২৯
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে একটি পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। হামলার পর প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেলে কয়েক দফা শহরজুড়ে মহড়া দিয়েছে তারা।
শনিবার দুপুরে শহরের প্রেসিডেন্ট রোড এলাকায় দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ অফিসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় অর্ধশত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সাংবাদিক ও স্টাফদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তারা সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে ডিভাইসও নিয়ে যায়।
দৈনিক সময়ের প্রহরী হাফিজ উদ্দিন জানান, দুপুরের দিকে হঠাৎ করে শতাধিক লোকজন উপরে উঠতে চাইলে আমি বাধা দিই। এ সময় তারা আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে উপরে উঠে যায়।
পত্রিকাটির নারায়ণগঞ্জের স্টাফ রিপোর্টার আরিফ হোসাইন কনক বলেন, দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে অফিসের নিচে শতাধিক মোটরসাইকেল অবস্থান করে। পরে শতাধিক লোকজন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে। অফিসে ঢুকেই আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। তারা ১১ ফেব্রুয়ারির পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদন ‘যা ছিল খসড়া চার্জশিটে’ সংবাদটি কেন প্রকাশ হয়েছে তার কৈফিয়ত জানতে চান। তারা বলতে থাকেন, ‘তোরা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে নিউজ করস। কালকের মধ্যে পত্রিকায় এর জন্য ক্ষমা না চাইলে পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেব ও সম্পাদককে গুলি করে মেরে ফেলব।’
তিনি আরও বলেন, তারা প্রায় ১৫ মিনিট অফিসে অবস্থান করে হুমকি দিতে দিতে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা অফিসে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে অফিসে থাকা সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইস খুলে নিয়ে যায়। এছাড়া একটি পিসির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়। ক্যামেরাও ভাঙচুর করে।
এদিকে ভিডিও ফুটেজে ওই হামলায় অংশ নেওয়া ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার নাসির ওরফে ছোট লিমন, খানপুরের আক্তার নুর, সুমন, সানি, ইসমাইল, আন্নান, কাজল, রুবেল, সিনাফি, রবিন, মনির, লক্ষণ, কৃষ্ণা, রাতুল প্রমুখকে চিহ্নিত করা গেছে বলে জানিয়েছেন সময় কর্তৃপক্ষ।
এদের মধ্যে নাসির ও আক্তার নূর এর আগে একাধিকবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন। তারা সবাই প্রয়াত নাসিম ওসমান এমপির ছেলে আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
এ ব্যাপারে সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি র্যাবের প্রকাশিত খসড়া চার্জশিট নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। মূলত সেই খসড়া চার্জশিট র্যাব প্রকাশ করে এবং ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করেন। সেটাই হুবহু তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওই প্রতিবেদনে আমাদের নিজেদের মনগড়া কোনো বক্তব্য নাই। কিন্তু তারা যেভাবে অফিসে হানা দিয়েছে সেটা ন্যাক্কারজনক। তারা অফিসের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিন ও একটি পিসির হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছে। ভাঙচুর করেছে ক্যামেরা।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম জানান, আলামত সংগ্রহ, অফিসের লোকজনদের সঙ্গে থাকা ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।