গাজীপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের শাওমি স্মার্টফোন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ৮:১৯:৪৬
‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খাতায় যুক্ত হলো শাওমি। বিশ্বের জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডটি গাজীপুরের ভোগড়ায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারাখানায় বছরে ৩০ লাখ স্মার্টফোন উৎপাদন করবে। বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ষষ্ঠ দেশ যেখানে শাওমির স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা রয়েছে। কারখানাটিতে শাওমি বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ স্মার্টফোন তৈরি করবে।
গাজীপুরে কারখানা স্থাপন করে মোবাইল তৈরির ঘোষণা দিয়েছে শাওমি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে কারখানাটিতে শাওমি ব্র্যান্ডের রেডমি সিরিজের স্মার্টফোন সংযোজন শুরু হয়েছে। দেশে শাওমির স্মার্টফোন সংযোজন করছে ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেড। ডিবিজি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, বিশ্বব্যাপী চীন, ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রভৃতি দেশে তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস রয়েছে। সেই সাথে স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি হোটেলে বিশেষ এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন এই অগ্রযাত্রার ঘোষণা করে শাওমি বাংলাদেশ। প্রথম অবস্থায় সেখানে হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে এর পরিধি ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
শাওমির স্মার্টফোন সংযোজন কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র প্রমুখ। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানের শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাওমি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। ভারত, চীন ও ভিয়েতনামে উৎপাদিত স্মার্টফোনের মতোই একই মানসম্পন্ন স্মার্টফোন বাংলাদেশের কারখানাতেও তৈরি হবে। এ জন্য এক কোটি মার্কিন ডলার বিদেশী বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে। ধাপে ধাপে হাজারের বেশি কর্মসংস্থান হবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে লাইফস্টাইল পণ্য, বিশেষ করে স্মার্ট জুতা রফতানির হাব হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে শাওমি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের জন্য একটি আনন্দের দিন। শাওমির মতো একটি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কারখানা করতে যাচ্ছে। শাওমিকে ধন্যবাদ জানাই স্মার্টফোন উৎপাদনে বাংলাদেশকে বেছে নেয়ার জন্য। আমদানিকারক দেশ থেকে স্মার্টফোন উৎপাদক দেশ হওয়ার জন্য আমরা বহু দিন থেকেই যুদ্ধ করছি। শাওমি অনেক দূর এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘শুধু স্মার্টফোন নয়, সব ধরনের প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশকে হাব বানান। এখান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করুন।’
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা চালুর জন্য শাওমিকে অভিনন্দন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। আমার বিশ্বাস, এখন থেকে দেশের মানুষ একটি প্রতিযোগিতামূলক দামে, বিশ্বমানের শাওমির সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করতে পারবেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে স্মার্টফোনের ৯৪টি খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। বর্তমানে ১৫৪টি খুচরা যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ। সে জন্যই দেশে একের পর এক স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা হচ্ছে। দেশের বাজারে বছরে ৪ কোটি মুঠোফোনের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে ৭০ শতাংশই বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে।