শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার উধাও
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২১, ৭:৫৪:২৭
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ৭৫টি অক্সিজেন ফ্লো মিটার (অক্সিজেন পরিমাপের যন্ত্র) উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১ আগস্ট থেকে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ৭৫টি অক্সিজেন ফ্লো মিটার পাওয়া যাচ্ছে না।
এতদিন বিষয়টি গোপন থাকলেও শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে শের-ই-বাংলা হাসপাতাল প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি তদন্তের জন্য হাসপাতালের উপ-পরিচালক আবদুর রাজ্জাককে প্রধান এবং সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের স্টোর অফিসার অনামিকা ভট্টাচার্য সম্প্রতি হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটারের (অক্সিজেন পরিমাপের যন্ত্র) তালিকা তৈরি করেন। তাতে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭৫টি ফ্লো মিটার কম পাওয়া যায়। পরে এগুলো খুঁজেও হদিস পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি তিনি হাসপাতাল পরিচালককে জানালে এ ঘটনায় ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর আলমকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সরকারিভাবে সরবরাহ করা এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুদান পাওয়া সিলিন্ডারসহ এই হাসপাতালের মোট ৬২৮টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
জুলাই মাসজুড়ে এই হাসপাতালের ৩০০ ওয়ার্ডের করোনা ইউনিটে প্রতিদিন সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী থাকতেন। এদের প্রায় ৭০ ভাগেরই কৃত্রিম অক্সিজেন প্রয়োজন হতো। অক্সিজেন নিয়ে রোগীর স্বজনদের মধ্যে হাহাকার লেগে থাকতো।
সূত্র জানায়, গত ১ আগস্ট থেকেই হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে এসব সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটারগুলো উধাও হয়ে যায়। এতদিন বিষয়টি গোপন ছিল। এরপর এসব সিলিন্ডার উদ্ধারে চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার হদিস মেলেনি।
শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। কিন্তু এরপর বিভিন্ন ওয়ার্ডে সন্ধান চালিয়ে রবিবার পর্যন্ত এসব জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম উদ্ধার করা যায়নি।
জানা গেছে, করোনা ইউনিটে ওয়ার্ড মাস্টারদের মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও সিলিন্ডার মিটার সরবরাহ করা হয়। কোন ওয়ার্ডে কতটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও সিলিন্ডার মিটার নেওয়া হয়েছে তার তালিকা করা হয়েছে।
ওই তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ড তল্লাশি করে অন্তত ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭৫টি অক্সিজেন ফ্লো মিটারের হদিস নেই। সাধারণ ওয়ার্ডেও সেগুলোর খোঁজ মেলেনি।
হাসপাতালের পরিচালক এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটার কেন পাওয়া যাচ্ছে না সে বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, হাসপাতালের উপ-পরিচালক আবদুর রজ্জাককে প্রধান ও করোনা ইউনিটের তত্ত্বাবধায়ক মনিরুজ্জামান শাহীনকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, আবদুর রাজ্জাক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কমিটির বাকি সদস্যরা কাজ করছেন। আমরা আশা করছি, এই সপ্তাহের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে এবং তাতে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে।