ক্ষমা চেয়ে সরিয়ে ফেলা হলো নিশো-মেহজাবিনের নাটক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুলাই ২০২১, ১:০৪:৫০
ঈদুল আজহার বিশেষ নাটক ‘ঘটনা সত্য’ নিয়ে দিনভর চলেছে আলোচনা। আফরান নিশো ও মেহজাবিন চৌধুরী অভিনীত এই নাটকটির মূল বার্তাটি ছিল এমন- পাপ করলে তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়। নাটকে নিশো-মেহজাবিনের পাপের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা না থাকলেও তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয় প্রায়শ্চিত্ত নিয়ে। দেখা যায়, চুরি করে জীবন নির্বাহ করা দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় ‘বিশেষ শিশু’!
সমাজকর্মী তথা দর্শকের মন্তব্য, এই নাটকের মাধ্যমে কুসংস্কার প্রচার করা হয়েছে। প্রমাণের চেষ্টা হয়েছে, বিশেষ শিশু জন্ম নেওয়া মানেই বাবা-মায়ের পাপের ফসল! আশার কথা, এমন অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি নাটকটিকে প্রত্যাহার করে নেয় ইউটিউবসহ অনলাইনের সব মাধ্যম থেকে।
সঙ্গে নাটকটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার পক্ষ থেকে প্রকাশ্য ক্ষমা চেয়ে নেন নাটকটির প্রধান দুই শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবিন চৌধুরীসহ নির্মাতা রুবেল হাসান, নাট্যকার মঈনুল সানু এবং প্রযোজক এস কে সাহেদ আলী।
তারা মনে করেন, দর্শকদের অভিযোগটির ভিত্তি রয়েছে। এবং এটি তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। ‘ঘটনা সত্য’ নাটকের নাট্যকার, পরিচালক, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে প্রযোজক এস কে সাহেদ আলী পাপ্পু গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এই অনভিপ্রেত ঘটনাটির জন্য।
তার ভাষায়, ‘আপনাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ নাটকের মাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সাথে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। যারা আমাদের এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে জানাই, প্রথম বার্তা পাওয়ার পরপরই আমরা উপলব্ধি করি, অসাবধানতাবশত নাটকে আমরা ভুল একটি বার্তা দিয়েছিলাম। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিই।’
নাটকের দুই প্রধান শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেক বাবা-মা ও সন্তানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা জানাই। সেই সাথে, ভবিষ্যতে এমন নাটক করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যা সঠিক বার্তা সমাজে ছড়িয়ে দেয় এবং দর্শকদের সঠিক পথে পরিচালিত করে। পুরো কাজটির সঙ্গে জড়িত সবার পক্ষ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাইছি।’
উল্লেখ্য, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকটি সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হয় গতকাল ২৪ জুলাই। সেটি আজ (২৫ জুলাই) দুপুর নাগাদ প্রত্যাহার করা হয়। নাটকটি প্রকাশের পর আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানায় চাইল্ড ফাউন্ডেশনসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শক।
‘ঘটনা সত্য’র গল্পে দেখা গেছে, বিলকিছ ও মুকুল পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটের গৃহপরিচারিকা ও গাড়ির ড্রাইভার। তারা সব সময় এটা-সেটা চুরি করে, কাজে ফাঁকি দেয়, মিথ্যা বলে! এতে মালিক পক্ষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। শুধু তা-ই নয়, কাজের মেয়ে বিলকিছ বাজার থেকে সস্তা ও পচা সবজি কিনে আনে, ফ্রিজে রাখা খাবার এঁটো করে রাখে, বাসায় রাখা অন্যের কসমেটিকস নিজে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে, অপচয় করে।
অন্যদিকে মুকুলও মিথ্যা বলে, ডিউটি বাদ দিয়ে অন্যত্র যাত্রী বহন করে, লুকিয়ে গাড়ির তেল বিক্রি করে। ঘটনাক্রমে বিলকিছ ও মুকুলের সম্পর্ক প্রণয়ে রূপ নেয়, গড়ায় বিয়েতে। জন্ম হয় একটি বাচ্চা। চিকিৎসক জানান, বাচ্চাটি স্বাভাবিক নয়- বিশেষ শিশু। বিলকিছ ও মুকুল ধরে নেয়, এটি তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত!