জগন্নাথপুরে নদী খনন নিয়ে চলছে লুটপাট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ এপ্রিল ২০২১, ৬:৫২:০৭
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলজুর নদী খনন নিয়ে লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পাউবো’র বিরুদ্ধে অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করে নদীকে খালে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট করা হচ্ছে। এছাড়া নকশা অনুযায়ী নদী খনন না করে নদীর পাড়ের অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার নদীর সীমানা চিহ্নিত করে দিলেও পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সীমানা অনুযায়ী নদী খননের কাজ করছে না।
অভিযোগ উঠেছে, নদীর পাড়ের অবৈধ দখলদার ও জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে নন্দীরপাড়ের অবৈধ দখল বহাল রাখেন। এমনকি নদী খননের মাটি দিয়ে অবৈধ দখলদারদের জায়গা আরও ভরাট করা দেওয়া হচ্ছে।
নদী খননের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশন টেক ও পাউবো’র কর্মকর্তারা লুটপাটের মচ্ছবে মেতে উঠেছেন। সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের এত বড় প্রকল্পের কাজ চলমান থাকলেও পাউবো’র এসও হাসান গাজী ব্যতিত বড় কোনো কর্মকর্তাকে কাজ পরিদর্শন করতে দেখা যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী খননের মাটিগুলো নদীতে স্তুপ আকারে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই মাটিগুলো আবার নদীতে মিশে যাবে। এছাড়া নদী খননের মাটি বিক্রি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পাউবো’র লোকজন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব অনিয়মে সম্পৃক্ত আছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মী খায়রুল ইসলাম ও প্রকৌশলী কামরুজ্জামানসহ স্থানীয় কিছু সুযোগসন্ধানী দালাল।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়গুলো অবহিত করলে জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পাউবো’র লোকজনকে ডেকে খননকৃত মাটি সরানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে কিছু মাটি সরানোর কাজ করছেন।
নদী খননের নামে লুটপাট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিছু কিছু এলাকায় প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমরা লিখিত জানিয়েছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও হাসান গাজী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ঠিকমতো কাজ আদায় করতে। আমি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ তদারকি নিয়ে ব্যস্ত। লুটপাটের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ বাস্তবায়ন করছে। আমরা পাউবোকে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করতে বলেছি।’