বিএনপি সরকারের মদদ না থাকলে গ্রেনেড হামলা হতো না—শেখ হাসিনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ আগস্ট ২০২০, ৩:৩২:০৪
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদ না থাকলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা হতো না। এছাড়া ২১ আগস্টের হামলায় বিএনপির জড়িত থাকার প্রমাণ সে সময়েই তাদের বক্তব্যে পাওয়া গেছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় সেদিনই ঘটনাস্থলে নিহত হন ১৬ জন। আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগস্ট মারা যান। প্রায় দেড় বছর পর মৃত্যু হয় ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের। সবমিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে।
সেদিনের আকস্মিক হামলার মুখে প্রাণ তুচ্ছ করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তৈরি করা মানবঢালে অল্পের জন্য বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ওই হামলায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জাতি। বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ শুক্রবার।
বর্বরোচিত ওই হামলার দিনটি উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট হামলায় বিএনপির জড়িত থাকার প্রমাণ সে সময়েই তাদের বক্তব্যে পাওয়া গেছে। তারা জড়িত বলেই আলামতগুলো নষ্ট করে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর নানা অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়। সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর বোমা হামলাসহ দেশের ৫ শতাধিক স্থানে বোমা হামলা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা যখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ ও র্যালি করতে যাই, সেই সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। এই হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করাই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রত্যেকটা ঘটনা ঘটার আগে খালেদা জিয়া যে ভবিষ্যদ্বাণী ও বক্তব্য রেখেছিলেন, সেগুলোই তার প্রমাণ। কোটালীপাড়ায় বোমা হামলার আগে তিনি বলেছিলেন, ১০০ বছর ক্ষমতায় আসতে পারবে না আওয়ামী লীগ। আবার ২১ আগস্ট বোমা হামলার আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনা কোনো দিন বিরোধী দলের নেতা হতে পারবেন না। এ বক্তব্যগুলো প্রমাণ করে যে এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারা জড়িত। তাছাড়া আলামত নষ্ট করা একটি প্রধান প্রমাণ।
সরকারপ্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু করতেই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তাছাড়া ২১ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আমার বাঁচার কথা নয়।
‘সেদিন যে অবস্থা থেকে বেঁচে এসেছি তা খুবই কষ্টকর। এমনি সময় এই ধরনের হামলা হলে সবাই ছুটে আসতো সেবা দিতে। আমরা কোনো সেবা পাইনি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলও তখন বন্ধ, কেউ সেবা নিতে পারেনা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার উপর ছোঁড়া গ্রেনেডের দুটি অবিস্ফোরিত ছিলো। পরে সেগুলো আলামত হিসেবেও সংগ্রহ করা হয়নি। এমনকি হামলার পরপরই ওই জায়গা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয় আলামত নষ্ট করতে। কর্মীরা মানবঢাল বানিয়ে আমাকে না বাঁচালে আমি বাঁচতাম না। ২১ আগস্টের সঙ্গে যদি বিএনপি জড়িত নাই থাকবে তাহলে তারা হামলার আলামত কেন নষ্ট করলো।
শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতির যে বিষবৃক্ষ বিএনপি রোপন করে গেছে তার ফল দেশ আজও ভোগ করছে। দুর্নীতির এই বিষবৃক্ষ আওয়ামী লীগ মূলোৎপাটন করছে।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।