হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে বসবাসের সুযোগ দেবে ব্রিটেন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০২০, ১২:৪০:৫৬
কঠোর সমালোচনাকে উপেক্ষা করে হংকংয়ের জন্য ‘বিতর্কিত’ নিরাপত্তা আইন পাস করেছে চীনা সরকার। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হংকংয়ের ৩০ লাখের বেশি মানুষ। যাদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে ব্রিটেন।
স্থানীয় সময় বুধবার (১ জুলাই) দেশটির পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বিট্রিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘নতুন নিরাপত্তা আইন হংকংয়ের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করেছে। যারা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদেরকে ব্রিটেনে আসার সুযোগ দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ব্রিটিশ ন্যাশনাল পাসপোর্টধারীসহ বাকি ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন হংকংয়ের নাগরিক পর্যায়ক্রমে ব্রিটেনে এসে ৫ বছরের জন্য বসবাস করতে পারবেন। স্থায়ী বসবাসের জন্য বা ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের জন্য পরবর্তীতে আবেদন করতে পারবেন।’
মূলত ১৯৮০ সাল থেকে হংকংয়ের নাগরিকদের জন্য ব্রিটিশ ন্যাশন্যাল ওভারসিজ পাসপোর্ট ইস্যু করেছিল সরকার। যাতে ভিসা ছাড়াই ৬ মাসের জন্য যুক্তরাজ্যে সফর করতে পারেন হংকংয়ের নাগরিকরা। যদিও তা পরবর্তীতে কিছু কাটছাঁট করা হয়।
নতুন করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ব্রিটিশ ন্যাশনাল ওভারসিজ পাসপোর্টধারী এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজ এবং পড়ালেখার সুযোগসহ পাঁচ বছরের জন্যে ব্রিটেনে বসবাসের সুযোগ পাচ্ছেন।
তবে, ব্রিটেনের এমন সিদ্ধান্তে নাখোশ চীন। দেশটির পক্ষ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলার বেইজিংয়ের সর্বোচ্চ আইন পরিষদ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস স্ট্যান্ডিং কমিটি (এনপিসিএসসি) সর্বসম্মতিক্রমে হংকংয়ের জন্য বিতর্কিত আইনটি পাস করে। পরে তাতে স্বাক্ষর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
এই আইনের মধ্যদিয়ে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের ওপর চীনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ওই নগরীর স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে, আইন পাস হওয়ার সঙ্গেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে হংকং। যেখানে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা ধরপাকড়ও হয়েছে। একজনকে গ্রেফতারেরও খবর দিয়েছে বিবিসি।
এই অবস্থায় হংকং নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হংকং ইস্যুতে বেশ চাপে পড়ল চীন।
জানা যায়, নতুন এ আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাঁত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এসব অপরাধ কেউ করলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
তবে, আইন পাসের আগে থেকেই সমালোচকরা বলে আসছিলেন, নতুন এই আইন হংকংয়ের পরিচয়কে আরও বড় হুমকির সম্মুখীন করলো। তবে চীন বলছে, হংকংয়ে অশান্তি ও অস্থিতিশীলতা মোকাবিলার জন্য এই আইন প্রয়োজন। সেইসঙ্গে এই বিষয়ে সমালোচকদের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি।