সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যা মামলার রায় ৭ জানুয়ারি
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩:০৪:২৮

সিলেটের বহুল আলোচিত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন হত্যা মামলার রায় আগামী ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করা হবে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এই দিন ধার্য করেন। সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বদরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৩০ নভেম্বর) মহানগর দায়রা জজ আদালতে আলোচিত এই হত্যা মামলার কারাবন্দি আসামি বহিষ্কৃত এএসআই আশেক এলাহির যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর এই মামলায় পলাতক থাকা ৫ আসামির যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছিল। মামলার বাকি আসামিরা বর্তমানে জামিন পেয়ে পলাতক রয়েছেন। এরমধ্যে মামলার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া গত ১০ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে জামিনে কারামুক্ত হন, যদিও পরে চেম্বার জজ তার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন, কিন্তু তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি এবং তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই মামলার অপর তিন আসামি সাবেক এসআই হাসান উদ্দিন শুরু থেকেই পলাতক, সাবেক কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদ জামিন পাওয়ার পর একবার আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন, কিন্তু এরপর থেকে তারাও পলাতক রয়েছেন। এছাড়াও সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর গভীর রাতে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান উদ্দিনকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। পরদিন সকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মামলার পর মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। এ ঘটনায় ফাড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
এসআই আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। এতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন— সহকারী উপ-পরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।
২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার বিচার শুরু হয় এবং মোট ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৬৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এখন রায়ের জন্য প্রস্তুত। দীর্ঘ চার বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এখন এই চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে নিহত রায়হানের পরিবার ও সিলেটবাসী।



