যে আলোচনার পর চা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২২, ১০:৫৬:৪৪
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : এক সফল সমঝোতা বৈঠক শেষে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা ৮ দিনের মাথায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা।
শনিবার শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে এ সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সাবেক চিফ হুইপ মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি, মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) মৌলভীবাজার জেলার সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রহমান, শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. শামীর অর রশিদ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপষ্টো রামভোজন কৈরী, সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সহ-সভাপতি পঙ্কজ এ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ গোয়ালা, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরাসহ, বালিশিরা, সিলেট, জুড়ী, বড়লেখা, চট্টগ্রাম, মনু, ধলই চা ভ্যালির শীর্ষ নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
সমঝোতা সভা শেষে আব্দুস শহীদ এমপি সাংবাদিকদের জানান, চা শ্রমিকদের টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপাতত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব নিয়ে চা শ্রমিকদের সাথে আলোচনা শেষে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে।
আব্দুস শহীদ বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শেষে দেশে ফিরে চা শ্রমিকদের চলমান সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসবেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের নিজের পরিবারের মানুষ মনে করেন। তাই চা শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সব সময় আন্তরিক।
বৈঠক শেষে, চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন গোয়ালা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধানের প্রতি সম্মান জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার ঘোষণা করছি। আজ থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের ১৪৫ টাকার যে মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন- তার প্রতি সম্মান জানিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। বিজয় হাজরা মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে চা শিল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিকদের টানা ধর্মঘটের ফলে চা বাগানগুলো এ পর্যন্ত প্রায় শত কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ১২০ টাকা থেকে ৩শ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকরা প্রথমে চার দিন দুই ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করে টানা ধর্মঘটের আলটিমেটাম দেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় শ্রমিকরা গত ১৩ আগষ্ট থেকে লাগাতার ধর্মঘট পালন করেন।