গ্রামে ৫জি সেবা সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্প অনুমোদন
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২১, ৮:০৪:৪৫
গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের ৫জি সেবা সম্প্রসারণ, মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজুয়্যাল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণসহ ১০টি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে এক হাজার ১৮৮ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩৭ কোটি ব্যয় করা হবে।
আজ মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় অনুমোদিত ১০টি প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সড়ক ও সেতু সংশ্লিষ্ট তিন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে একনেকে। এরমধ্যে ৯টি নতুন প্রকল্প আর একটি সংশোধিত।
প্রকল্পগুলো হল-
১. ‘জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (রংপুর জোন)’। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর।
২. ‘বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন’। এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
৩. ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রকল্পটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বরে বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড।
৪. ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০২০ সাল থেকে জুন ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ।
৫. ‘চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (অতিরিক্ত অর্থায়ন, এলজিইডি অংশ)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
৬. ‘ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২৬ সালে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
৭. পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প- ৩য় পর্যায়’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)।
৮. ‘কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর জন্য ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
৯. এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি সংশোধন হলে দুই বছর মেয়াদ বেড়ে হবে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। ১০. আর ‘শেখ হাসিনা সোলার পার্ক, জামালপুরে মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)।