গোয়াইনঘাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় হিফজুর রিমান্ডে
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০২১, ৯:২২:৫২
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি : সিলেটের গোয়াইনঘাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে গৃহকর্তা হিফজুরকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (২০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওসমানী মেডিক্যাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে হিফুজরকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ হিফজুরের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে গোয়াইনঘাট আমলী আদালত-১০ এর বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে শনিবার (১৯ জুন) সকালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করার দায়ে তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ।
তিনি বলেন, আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসি দাবি করেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হিফজুর সরাসরি জড়িত। বাইরে থেকে কেউ হত্যার জন্য এলে সঙ্গে করে অস্ত্র নিয়ে আসতো। তাদের ঘরের বটি, দা দিয়েই খুন করতো না। বিরোধের কারণে খুনের ঘটনা ঘটলে প্রথমেই হিফজুরকে হত্যা করা হতো কিংবা স্ত্রী সন্তানদের প্রথমে হামলা করলেও হিফুজর তা প্রতিরোধের চেষ্টা করতেন। এতে স্বভাবতই তিনি সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হতেন।’
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের নিজ ঘর থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩০), তার দুই সন্তান মিজান (১০) ও আনিছার (৩) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘর থেকেই হিফুজরকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে হিফজুর পুলিশ পাহারায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার আচরণ প্রথম থেকেই সন্দেহজনক বলে জানিয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতের কোনও এক সময় তাদের হত্যা করা হয়। ওই রাতে মামার বাসায় থাকায় বেঁচে যায় ওই দম্পতির পাঁচ বছরের ছেলে আফসান।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদ ও হিফজুরের মোবাইলফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে ওই দিন এ বাড়িতে কোনও বহিরাগত লোক প্রবেশের আলামত পাওয়া যায়নি। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া এবং স্ত্রী ও দুই সন্তানের অসুস্থতা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই হিফজুর এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ঘটনার আগের দিন সাহেববাজার এলাকার কালাগুলে আতা নামের এক মোল্লার কাছে যান হিফজুর। হিফজুর আতা মোল্লার মুরিদ ছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি ওই মোল্লার কাছে যাওয়া আসা করতেন। ঘটনার দিন সেখান থেকে হিফজুর বাড়ি ফিরেন। স্ত্রীকেও ওই মোল্লার কাছে নিয়ে যেতেন তিনি। হিফজুর রহমান পান ব্যবসা করতেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পানের টাকা সংগ্রহ করার জন্য তিনি বাজারে যেতেন। কিন্তু ওইদিন তিনি আর বাজারে যাননি। এমনকি ঘটনার ভোররাতে তিনি তিন জন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ফোনে। এর মধ্যে একজন অটোরিকশা চালক। তার কাছে ফোন করে হিফজুর অসুস্থতার কথা বলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত নারীর বাবা আয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।