জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচন: ইভিএম নিয়ে দ্বিধা, তবু উৎসবের আমেজ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১:৫৭:০০
ভোটের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জমে উঠেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচন। প্রথমবারের মতো এই পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেওয়া হবে। নতুন পদ্ধতিতে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধা থাকলেও আছে উৎসবের আমেজ। আবার ভোটারদের বড় একটি অংশের মধ্যে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা আছে। তবে তারা সব ছাপিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের স্বপ্ন দেখছেন।
পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া (নৌকা), বিএনপি মনোনীত হারুনুজ্জামান হারুন (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন (চামচ), আমজাদ আলী শফিক (মোবাইল ফোন) ও বিষ্ণু চন্দ্র রায় (জগ)। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী আছেন।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সব গ্রামেই সাদাকালো পোষ্টার গাছে, রাস্তার পাশে ঝুলছে। একটা ভিন্ন আমেজ তৈরি করেছে।
শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার কলেজ শিক্ষার্থী নাজিম উদ্দিন। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘পৌরসভার হবিবপুর মাদ্রাসার পয়েন্টে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার সুবাদে পৌর নির্বাচনের প্রচারণা ও সকল প্রার্থীদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। সবমিলিয়ে পৌর নির্বাচন খুব জমজমাট হয়ে উঠেছে। তবে এবারের নির্বাচনে ইভিএম সিস্টেমে ভোট প্রদানের নিয়ম থাকায় অনেক ভোটার ভোট দিতে জটিলতায় পড়বেন বলে ধারণা করছি।’
তার মতো ইভিএম নিয়ে দ্বিধার কথা জানালেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ইভিএম সিস্টেম কী বুঝতে পারছিনা। তবে আমরা সাধারণ ভোটাররা চাই আগের নিয়মে ভোট দিতে।’
৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘এবারের পৌর নির্বাচনে ইভিএম সিস্টেমে ভোট প্রদানের নিয়ম চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। এ বিষয়ে অনেক নাগরিক অজ্ঞ রয়েছেন। এমতাবস্থায় পূর্বের নিয়ম বহাল রাখলে ভোটাররা সহজে ভোট প্রদান করতে পারবেন।’
তবে যে পদ্ধতিতে হোক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের আশা করছেন তারা।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার সুমন চক্রবর্তী জানান, ডিজিটালাইজেশনের যুগে বর্তমান প্রজন্মের কাছে ইভিএম সিস্টেম ভালো এবং সহজ পদ্ধতি। কিন্তু নিরক্ষর এবং বয়োবৃদ্ধ লোকদের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। তবে সকলের সুবিধার কথা বিবেচনা করে পূর্বের নিয়ম বহাল রাখলে সুবিধা হতো।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতির সাথে ভোটারদের পরিচয় করিয়ে দিতে বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ১৪টি কেন্দ্রে মক ভোটিং (অনুশীলনমূলক ভোট) হবে। পৌরসভার নির্বাচনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। ভোটারদের হতাশার কারন নেই।’
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচন হবে। ভোটার ২৮ হাজার ৫৫৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৩৩৮ ও নারী ভোটার ১৪ হাজার ২২১ জন।