ব্রেক্সিট পরবর্তী জাপানের সঙ্গে ব্রিটেনের প্রথম চুক্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৪:০৭:১৪
বেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে জাপান। এই চুক্তির চূড়ান্ত বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড বা ১৯.৫ বিলিয়ন ডলার বাড়বে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। প্রাথমিক এই চুক্তি চূড়ান্ত করতে এখন দরকার দুই দেশের পার্লামেন্টের স্বীকৃতি।
এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে জোরদার করতে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) চূড়ান্ত চুক্তি করার বিষয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সম্মত হয়ে প্রাথমিক চুক্তিতে সই করেছেন। বেক্সিট পরবর্তী অর্থনীতিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে এই চুক্তির বিষয়ে গত ৯ জুন থেকে জাপানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিল যুক্তরাজ্য। চুক্তির বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই দীর্ঘ সময়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ১শ’র বেশি প্রতিনিধি।
প্রাথমিক এই চুক্তি সই হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক সচিব লিজ ত্রুজ বলেন, ‘এটি যুক্তরাজ্য ও জাপানের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটিই ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যের প্রথম সবচেয়ে বড় চুক্তি।’
ত্রুজ আরও জানান, ট্রান্স প্যাসিফিক অংশিদারিত্বে বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে কৌশলগতভাবে এই চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুমনা দেশগুলোর সঙ্গে আধুনিক শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করে বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে চায় যুক্তরাজ্য। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাজ্যের খাদ্য, পানীয়, প্রযুক্তি ও উৎপাদন খাতের ব্যবসায়ীরা অধিক সুবিধা পাবেন বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাজ্য-জাপান অংশীদারিত্বের এই চুক্তিটি চূড়ান্ত হলে জাপান-যুক্তরাজ্য দুই দেশই ৯৯ শতাংশ পণ্যের ক্ষেত্রেই শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে।
তবে, দ্বিপাক্ষিক এই চুক্তিকে খুব বড় করে দেখতে চান না সমালোচকরা। তারা বলছেন, এই চুক্তিকে যত বড়ভাবে ভাবা হচ্ছে আসলে তেমনটি নয়। এটি যুক্তরাজ্যের জিডিপিকে মাত্র ০.০৭ শতাংশ এগিয়ে দিতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বের হওয়ায় যে পরিমাণ অর্থনৈতিক সুবিধা কাঠামো হারাতে হয়েছে সে তুলনায় এটি অতি নগন্য।
যুক্তরাজ্যের ব্যবসীয়ারাও এই অগ্রগতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এ ধরনের একটি চুক্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে চান।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্সের মহাপরিচালক এডাম মার্শাল বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে করা এই চুক্তিটি অবশ্যই ব্যবসায়ী মহলে উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিয়েছে। এটা যেমন ঠিক তেমনি আমাদের প্রত্যাশা আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যেন এমন একটা চুক্তি থাকে। এবং এজন্য আমাদের মন্ত্রী-প্রতিনিধিরা প্রয়োজনে দ্বিগুণ শক্তি ও মনোবল নিয়ে কাজ করবে বলেও আমরা আশা করি।’
কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রির মহাপরিচালক ক্যারলিন ফেয়ারবায়ার্নও একে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, এটি অবশ্যই একটি যুগান্তকারী একটি মুহূর্ত। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন খাতে বড় পরিসরে জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণে এটি একটি বড় সুযোগ তৈরি করবে।