গোয়ালাবাজার-জগন্নাথপুর সড়কের সংস্কার কাজ শুরু, জনমনে স্বস্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ আগস্ট ২০২০, ৯:২৫:৪১
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৬ মাস বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে সিলেটের ওসমানীনগর-সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সংযোগ সড়ক গেয়ালাবাজার-জগন্নাথপুর রাস্তার ওসমানীনগর অংশের সংস্কার কাজের। খানা-খন্দে ভরা এই সড়কটির নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।
জানা যায়, এলজিইডির তত্ত্বাবধানে গতবছরের শেষের দিকে সংস্কার কাজ শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই আবার করোনাভাইরাসের অজুহাতে বন্ধ হয়ে যায়। এতে জনদুর্ভোগ প্রকট আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে- রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলতো দূরের কথা মানুষজন চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যাতায়াতের এই দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া। দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এলজিইডির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ রেখে নানা অজুহাতে দীর্ঘ ছয় মাস বন্ধ রাখে। তবে, গত ২৬ আগস্ট জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির ওসমানীনগর অংশে পুনরায় সংস্কার কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার থেকে জগন্নাথপুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন দুই উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক বাসিন্দারা। জগন্নাথপুর উপজেলার অধিকাংশ বাসিন্দারা প্রায় প্রতিদিনই ব্যবসাসহ নানা কাজে ওই সড়ক দিয়েই আসতে হয় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়। সড়কটির এমন বেহাল দশায় তাদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছিলো। এ অবস্থায়ই ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর সড়কের তেরহাতি, বড় ইসবপুরের বাক, ইসবপুর মাজার গেট, রাজচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামন, লামা ইসবপুর, খুজগিপুর এলাকাসহ প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কেরই ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙনের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এলজিইডির তত্ত্বাবধানে গতবছরের শেষ দিকে সড়কটির ওসমানীনগর অংশ (গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর) পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ৮ কিলোমিটার এলাকার সংস্কার কাজ শুরু করেছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাশেদুজ্জামান কন্ট্রাকশন। শনিরবাজার থেকে সংস্কার কাজ শুরু হলে কিছু অংশে আরসিসি ঢালাই হয়। পরবর্তীতে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে কাজ বন্ধ করে চলে যায় সংশ্লিষ্টরা। তবে, আরটিআই প্রজেক্ট এর আওতায় এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে খুব শিগগিরই সংস্কার কাজ শেষ হবে।
উমরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মুকিত মিয়া, মানিক মিয়া ও ফজলু মিয়াসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জনগুরুত্বপূর্ন ওই সড়কটি ওসমানীনগর অংশে বেহাল দশার দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় এমপিসহ কেউই এগিয়ে আসেননি। স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছিল সড়কের একাধিক অংশ।
ইউপি চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া বলেন, উমরপুর ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার বিহীন থাকায় দর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন দুই উপজেলার বাসিন্দারা। সড়কটি দুই উপজেলার সংযোগ ও এলজিইডির অধীনস্থ থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করার সুযোগ ছিলনা। এরপরও আমি জনসাধারনের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে নিজ উদ্যোগে সড়কের ভাঙ্গা স্থানগুলিতে ইট ও পাথর দিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই। আমি আশাবাদি দুই উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ লাগবে সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে।
ওসমানীনগর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী নাজমুল করিম বলেন, গোয়ালাবাজার-জগন্নাথপুর সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করার পর করোনার কারণে কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৬ আগষ্ট থেকে আবারও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। কাজের গুনগত মান ঠিক রাখতে এলজিইডি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকক তদারকি করা হচ্ছে।