সিলেটে বাস শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫০
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুন ২০২০, ১২:২৬:২৭
অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে সিলেটে বাস শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) বিকেলে পরিবহন শ্রমিকদের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ গুলি ও র্যাব টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ টাকার কোনো হিসাবও তিনি দিতে পারছেন বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্টে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। তারা ফলিকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, ঈদের আগে কল্যাণ তহবিলের টাকা থেকে পরিবহন শ্রমিকদের ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী প্রেরণের দাবি জানিয়েছিলেন কয়েকজন শ্রমিক নেতা। কিন্তু সেলিম আহমদ ফলিক এতে রাজি হননি। পরে তার কাছে তহবিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকার হিসাব চাওয়া হলে তিনি ৪১ লাখ টাকার হিসাব দেন।
পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠন ‘মিতালী শ্রমিক ইউনিয়ন’র সাংগঠনিক সম্পাদক মিলাদ আহমদ রিয়াদ বলেন, ‘শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকা থাকার কথা। কিন্তু সেলিম আহমদ ফলিক আমাদের হিসাব দিয়েছেন মাত্র ৪১ লাখ টাকার। বাকি ২ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের পুরো টাকার হিসাব না দিলে তাকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’
এদিকে, ফলিকের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিকদের একটি পক্ষের এই আন্দোলনে অপর পক্ষও (ফলিকের অনুসারী) মাঠে নামে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বাস টার্মিনাল এলাকায় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিককেও বারবার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল বলেন, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এছাড়া র্যাব ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, সংঘর্ষ থামানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব এখনো জানা যায়নি।