দিরাই পৌর শহরের মজলিশপুর গ্রামে তিনটি স্থানে একই সময়ে মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় করেছেন এলাকার সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা।
বুধবার বিকেলে মজলিসপুরস্থ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপসনালয় শিবগাছ (বাবাগাছ) প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সফি উল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. জয়া সেনগুপ্তা এমপি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মর্মাহত, ব্যাথিত, নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। আমরা সকলে হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই সম্প্রতির বন্ধনে বসবাস করতে চাই। অতীতে যেভাবে আমরা মিলেমিশে ছিলাম সেভাবেই থাকতে চাই।’
জয়া সেন বলেন, স্বাধীনতার মাসে মুজিব জন্ম শতবর্ষে আমাদের অঙ্গীকার হোক অসাম্প্রদায়িক চেতনার। সম্প্রীতি ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কোন জায়গা নেই। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, আর যাতে এ ধরনের কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আজন্ম লড়াই করে গেছেন। মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় জাগ্রত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করা যায় না। এ ঘটনা খুবই ঘৃণিত ও নিন্দনীয়। ঘটনাকারী যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও একাধিক গোয়েন্দাসংস্থার লোকজনকে এলার্ট করা হয়েছে, উনারা চেষ্ঠা চালাচ্ছেন। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ নেই।’
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলছেন, এ ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে কাজ করছে, আমরা আশাবাদি যেভাবে পুলিশ শিশু তুহিন হত্যাকান্ডের বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীকে সনাক্ত করতে পেরেছে, ঠিক সেভাবেই এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরা হবে। অপরাধী যেই হোক, যেখানেই থাকুক এই চক্রের মুখোশ উন্মোচন করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত সহকারি পুলিশ সুপার (দিরাই সার্কেল) বেলায়েত হোসেন, মেয়র মোশাররফ মিয়া, অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ, সিরাজ উদ দৌলা, অভিরাম তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী, জ্জোর্তিম্ময় দাস, হিরণ্ময় দেবনাথ প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, ওসি কে এম নজরুল, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ উল্লাহ, প্যানেল মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, কাউন্সিলর পংকজ পুরকায়স্থসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত রোববার মজলিসপুরস্থ, কালাচান গাছ, বাবাগাছ ও শিব গাছতলার মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ড. জয়া সেনগুপ্তা এমপি, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, ইউএনও, ওসি, পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকেই আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী জোরালো তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কাজ শুরু করেছে।