লন্ডনে মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে লায়েক মিয়া অভিযুক্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০২৫, ৯:৩৬:৪৮
লন্ডন প্রতিনিধি : পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের মনিয়ার রোডে নিজ বাসায় প্রায় ৫০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগে তার একমাত্র ছেলে লায়েক মিয়াকে (২৭) আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ১১টা ১ মিনিটে মেট্রোপলিটন পুলিশ মনিয়ার রোডের একটি বাসায় ছুরিকাঘাতের খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে আহত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে প্যারামেডিকদের চেষ্টার পরও ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পরদিন, শুক্রবার (২৭ জুন) লায়েক মিয়াকে হত্যাকারী সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করে শনিবার টেমস ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেয়। সোমবার তাকে ওল্ড বেইলি নামে পরিচিত লন্ডনের সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, নিহত নারী ছিলেন পাঁচ কন্যা সন্তানের জননী এবং লায়েক ছিলেন তার একমাত্র ছেলে। হত্যার সময় নিহত নারীর স্বামী স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ফাঁকে পূর্বপরিকল্পিত বা হঠাৎ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি বাইরে থেকে আনা হয়েছিল, নাকি ঘরের রান্নাঘর থেকেই নেওয়া হয়েছিল—এ বিষয়ে নিশ্চিত করেনি পুলিশ। জানা গেছে, অভিযুক্ত লায়েক মিয়া নিজে ওই ঠিকানায় বাস করতেন না।
নিহত নারীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের সুনামগঞ্জে। তার মৃত্যুর খবর যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রবাসী মহলেও শোকের ছায়া ফেলেছে। টাওয়ার হ্যামলেটসসহ যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
টাওয়ার হ্যামলেটসের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মাইক ক্যাগনি বলেছেন, আমরা বুঝতে পারি এই ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায়কে নাড়া দিয়েছে। তবে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা বিশ্বাস করি এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং দ্রুত প্রকৃত ঘটনা জানতে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।
স্থানীয় কাউন্সিলর আবু তালহা চৌধুরী বলেন, এটা অস্বাভাবিক এক ঘটনা। কমিউনিটিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই ঘটনা। অনেকেরই প্রশ্ন, মানসিকভাবে সুস্থ কোনও সন্তানের পক্ষেই কি এমন ঘটনা ঘটানো সম্ভব? পুলিশের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, তারা আমাদের জানিয়েছে এই ঘটনার পেছনে আরও অনেক কিছু আছে, যা এখনই প্রকাশযোগ্য নয়।