জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচন শনিবার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২০, ১:৫৭:৫৮
স্টাফ রিপোর্টার : জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচন আগামী ১০ অক্টোবর, শনিবার । নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর শহরের প্রতিটি এলাকা পোষ্টার-লিফলেটে আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে । নির্বাচনে নিজেদের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষে প্রার্থীরা জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কে হচ্ছেন আগামী দিনের পৌর মেয়র এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। উপ-নির্বাচনে মোট ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৩ জনই যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচনে সব সময় প্রার্থীদের পক্ষে প্রবাসীরা দেশে এসে নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করলেও এবার স্বল্প সময়ে নির্বাচন হওয়ায় কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রবাসীরা প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তবে, স্ব-স্ব দলের নেতাকর্মী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে তাদের স্বজনরা প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
ভোটারদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ উপ-নির্বাচনটি হচ্ছে প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী অথবা বিএনপির প্রার্থীর জন্য হবে আগামী পৌরসভা নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারন। ভোটারদের মধ্যে কোন উৎসাহ উদ্দীপনা না থাকলেও প্রার্থীরা তাদের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে জগন্নাথপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশীদ ভুইয়া (নৌকা), যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো: রাজু আহমদ (ধানের শীষ), জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রয়াত মেয়র হাজি আব্দুল মনাফের পুত্র, যুক্তরাজ্য প্রবাসী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হুসাইন সেলিম (জগ) ও সাবেক কৃতি ফুটবলার স্বতন্ত্র প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান (মোবাইল ফোন) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটারদের অনেকেই জানান, জগন্নাথপুর শহরের হবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক কয়েকবারের সফল মেয়র ছিলেন আলহাজ্ব আবদুল মনাফ। পৌর এলাকার উন্নয়নে মেয়র আবদুল মনাফের রয়েছে অনেক অবদান। নির্বাচনে প্রয়াত মেয়র আবদুল মনাফের ব্যক্তি ইমেজ ও জনপ্রিয়তার প্রভাব পড়তে পারে। তাই সাবেক মেয়র আবদুল মনাফের ছেলে আবুল হুসাইন সেলিমকে আবেগের বসে অনেকে ভোট দিতে পারেন।
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হুসাইন সেলিম তার পিতা জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে তাকে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আমার পিতার স্বপ্ন ছিল জগন্নাথপুর পৌরসভাকে সিলেট বিভাগের মধ্যে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তরিত করা। আপনারা আমাকে আগামী ১০ অক্টোবরের নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী করলে আমার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাব।
জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই গ্রামের বাসিন্দা ও জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রথম সফল চেয়ারম্যান ও ৫ বারের ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত হারুনুর রশীদ হিরন মিয়ার ছেলে হচ্ছেন মিজানুর রশীদ ভূইয়া। জগন্নাথপুর পৌর এলাকার উন্নয়নে হারুনুর রশীদ হিরণ মিয়ার অনেক অবদান রয়েছে। নির্বাচনে হারুনুর রশীদ হিরন মিয়ার প্রিয়জনরা তাঁর ছেলের জন্য কাজ করছেন। সেই সাথে রয়েছে পারিবারিক ইমেজ-প্রভাব, মাঠে রয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা, আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা। সব মিলিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন মিজানুর রশীদ ভূইয়া।
জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজু আহমদ বিগত নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে পরাজিত হয়েছেন। যে কারণে রাজু আহমদের জনপ্রিয়তা কিন্তু কম নয়। তবে, পারিবারিক ও ব্যক্তি ইমেজে এগিয়ে রয়েছেন আবিবুল বারী আয়হানও।
জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে ১১টি ভোট কেন্দ্রে মোট ২৮হাজার ৫শ’ ৫৯জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৩শ’ ৩৮ জন ও মহিলা ১৪ হাজার ২শ’ ২১ জন।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: মুজিবুর রহমান জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারী জগন্নাথপুর পৌর মেয়র আলহাজ্ব আবদুল মনাফ মৃত্যুবরণ করলে জগন্নাথপুর পৌরসভার উপ-নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে নির্বাচন স্থগিত করে দেন নির্বাচন কমিশন। পরে ১০ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।