নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ : মৃত্যু বেড়ে ১৪, দগ্ধ ২৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২:৫৬:৩৪
নারায়ণগঞ্জে মসজিদে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে এ পর্যন্ত শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জন মারা গেছেন। এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩ জন। তবে তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেশিরভাগের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, গুরুতর দগ্ধ আরো ২৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
যে ২৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁরা হলেন ফরিদ (৫৫), শেখ ফরিদ (২১), মনির (৩০), মো. রাশেদ (৩০), নয়ন (২৭), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), বাহার উদ্দিন (৫৫), শামীম হাসান (৪৫), মো. আলী মাস্টার (৫৫), মো. কেনান (২৪), নজরুল ইসলাম (৫০), রিফাত (১৮), আব্দুল আজিজ (৪০), মিজান (৪০), নাদিম (৪৫), হান্নান (৫০), আব্দুস সাত্তার (৪০), জুলহাস উদ্দিন (৩০), আমজাদ (৩৭), আব্দুল মালেক (ইমাম) (৬০), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), মামুন (২৩) এবং ইমরান (৩০)।
আর এ পর্যন্ত যে ১৪ জন মারা গেছেন তাঁরা হলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন দেলোয়ার (৪৮), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), কুদ্দুস ব্যাপারে (৭২), সাব্বির (২১), হুমায়ুন (৭০), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), জয়নাল (৫০), মাইনুদ্দিন (১২), জুয়েল (৭) এবং মো. রাসেল (৩৪)। এরমধ্যে জুয়েল, দেলোয়ার ও ইব্রাহিম গতরাতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসাইন ইমাম।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর দগ্ধ ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
মসজিদে বিস্ফোরণ এসি নয় গ্যাস লাইন থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন। শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ কথা জানান তিনি।
আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, মসজিদের নিচ দিয়ে (মেঝেতে) একটি গ্যাস পাইপ রয়েছে। আর এ পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা হয়। মসজিদে এসি চলার কারণে দরজা জানালা সব বন্ধ রাখা হয়। আলো বাতাস বের হতে পারে না। ফলে নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি। বিস্ফোরণের আগে বিদ্যুতের কোনো কিছু জালানোর সময় স্পার্কিং করে। আর সেই স্পার্কিং থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
তিনি আরও বলেন, মসজিদের মেঝেতে থাকা পানিতে গ্যাসের বুদবুদ ওঠায় সন্দেহ হয়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অনেকগুলো লাইন গেছে। আর পাইপগুলোর প্রতিটিতে একাধিক লিকেজ রয়েছে। সেই লিকেজের গ্যাস সব সময় মসজিদে ওঠতো। আর নামাজের আগে থেকে মসজিদের দরজা জানালা বন্ধ করে এসি চালু করার ফলে পুরো রুমে এসি ও গ্যাস মিশে যায়। আর তাতে করে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ ঘটে। এসি বিস্ফোরণ হওয়ার কারণ হলো এসিতে গ্যাস ছিল।