ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে ‘ভুল’ ডোজ দিয়েছে অক্সফোর্ড!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২০, ৩:০৯:৪২
অণুজীব বিজ্ঞানী এলিসা গ্রানাটো প্রথম এই ভ্যাকসিন নেন।
নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধের আশায় ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করেছে তার দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে বেশ কিছু মানুষকে নিজেদের অজান্তে ভুল ডোজ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মিরর ভ্যাকসিন সংক্রান্ত একটি বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডোজ ভুল হলেও ট্রায়াল বন্ধ কিংবা স্থগিত করছে না প্রতিষ্ঠানটি। গবেষকেরা ‘ভিন্ন উপায়ে’ ট্রায়ালের গতি ঠিক রাখছেন।
ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগে থেকেই অক্সফোর্ড বলে আসছে, আগামী সেপ্টেম্বরের ভেতর তারা ভ্যাকসিনটি আনতে চায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ এই ভ্যাকসিন পেতে তাদের সঙ্গে চুক্তিও করেছে।
ব্রিটেনের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির শীর্ষস্থানীয় ভাইরোলজিস্ট রবি গুপ্তা বলছেন, ‘এমন ভুল অস্বাভাবিক।’ গবেষকদের ওপর এখন চাপ বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।
ভুলের পরও ট্রায়াল ‘ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে’ বলে মিররের কাছে দাবি করেছেন অক্সফোর্ডের একজন মুখপাত্র।
মেইলে পাঠানো বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের প্রথম অংশের ডোজ এক প্রকার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়েছে। এখন আমরা আরেকভাবে ডোজের মাত্রা পরিমাপ করে দেখছি। এই পদ্ধতিতে মাত্রা একটু বাড়ানো হবে।’
‘ডোজের মাত্রা পরিবর্তনে কোনো সমস্যা নেই। গবেষণা থামছেও না।’
অক্সফোর্ড এখন পর্যন্ত ২ হাজার মানুষকে ট্রায়ালে যুক্ত করেছে। তাদের ভুলটা হয়েছে মূলত ডোজের মাত্রায়। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের প্রথম অংশে যে মাত্রার ডোজ দেয়ার কথা ছিল ভুলে ‘অন্য মাত্রার’ দেয়া হয়েছে। ঠিক কত মানুষকে ভুল ডোজ দেওয়া হয়েছে তা জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। তারা সবাই সুস্থ আছেন।
বড়দিনের আগেই টিকাদান কর্মসূচি শুরুর আশা: ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক স্যার জন বেল জানিয়েছেন, সামনের বড়দিনের আগেই গোটা ব্রিটেনে তারা টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে চান।
তিনি বলছেন, দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিন পেতে অক্সফোর্ড দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল চলতে থাকা অবস্থায় শেষ ধাপের ট্রায়াল শুরু করেছে।
ভ্যাকসিনের এই ট্রায়াল ব্যর্থ হলেও চিন্তিত নন জন বেল। তিনি বলছেন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা সম্ভব, ‘অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ব্যর্থ হলে আমরা প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনবো। কোনো না কোনো ভাবে সফলতা আসবেই। সেপ্টেম্বর/অক্টোবরের মধ্যে এটি নিশ্চিত হবে।’
কোনো প্রতিষেধক না থাকা নভেল করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করতে ব্রিটেনসহ আরও অনেক দেশ উঠেপড়ে লেগেছে। চীন জানিয়েছে তাদের করোনাভ্যাক ভ্যাকসিনটি এই বছরের শেষ নাগাদ আসতে পারে। দেশটিতে আরও বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না কোম্পানি বারবার বলছে, ট্রায়ালে তাদের ভ্যাকসিন কার্যকর দেখা যাচ্ছে। এই কোম্পানিটিও সেপ্টেম্বরের ভেতরে ভ্যাকসিন আনতে চায়।