আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০২৫, ১১:৪৯:২০
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শনিবার (১০ মে) উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগ এর যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।
এর পাশাপাশি আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
পরে এ বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয়। পরবর্তীকালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে এর নামকরণ করা হয় “আওয়ামী লীগ”। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের প্রতীকের ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সাল থেকে দলটির নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নির্বাচিত দল আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় ব্যাপক সংগ্রামের পরিণতি লাভ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
মুক্তিযুদ্ধের আগ মুহূর্তে পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সঙ্কটে পড়ে। পরে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ফের ক্ষমতায় আসে। এরপর ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালের নির্বাচন পর্যন্ত টানা চার মেয়াদে দেশ শাসন করে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ।
গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের নয় মাসের মাথায় নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।