ব্রাজিলের পর প্যারাগুয়ের মাঠে আর্জেন্টিনারও হার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৮:১৬:০৭
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ের ম্যাচে বিশেষভাবে চোখ ছিল লিওনেল মেসির দিকে। ‘হোম’ গ্যালারিতে প্রতিপক্ষের জার্সি নিষিদ্ধ করে প্যারাগুয়ে মূলত মাঠে মেসি-ম্যানিয়া থামাতে চাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এদিন পুরো গ্যালারি জুড়েই ছিল প্যারাগুয়ের লাল-সাদা জার্সি। শুধু যে সমর্থকদের কারণেই প্যারাগুয়ে আজ আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে তেমনটা নয়, মাঠের ফুটবলেও প্যারাগুয়ে আজ ছিল দারুণ। শুরুতে আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেলেও সমতায় ফিরতে সময় লাগেনি স্বাগতিকদের। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়েও যায় প্যারাগুয়ে। ওই গোল আর শোধ করতে পারেনি বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয়বারের মতো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাকে হারাল প্যারাগুয়ে। গত সেপ্টেম্বরে এই দেল চাকো স্টেডিয়ামেই তাদের কাছে হেরেছে ব্রাজিল। ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইয়েও ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল প্যারাগুয়ে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) আসুনসিয়নের দেল চাকো স্টেডিয়ামে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক প্যারাগুয়ে।।
ম্যাচের প্রথমার্ধে তবু কিছুটা গোছানো ফুটবল খেলতে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় বিবর্ণ। একের পর এক আক্রমণ চালালেও তা থেমেছে অ্যাটাকিং থার্ডেই। এরমধ্যে রয়েছে ফিনিশিংয়ের অভাবও। নিজের মধ্যে ছিলেন না দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। সবমিলিয়ে খেসারত দিল দলটি। তবে ম্যাচের ৮ মিনিটেই পিছিয়ে পড়তে পারতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দিয়েগো গোমেজের হেড লক্ষে থাকেনি। পরের মিনিটে মিগেল আলমিরনের বাইসাইকেল কিক নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর মুখে লেগে বেরিয়ে গেলে বেঁচে যায় আর্জেন্টিনা।
তবে ১১তম মিনিটে এগিয়ে যায় মেসির দল। এনজো ফার্নাদেজের বুদ্ধিদীপ্ত চিপ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে দারুণ এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন লাউতারো। যদিও শুরুতে অফসাইড ধরেছিলেন লাইন্সম্যান। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। ১৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। প্রথমে গুস্তাভো গোমেজের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তবে ঠিকভাবে বিপদমুক্ত করতে না পারায় কয়েক জনের পা ঘুরে বল পেয়ে যান ভেলাসকেস। তার ক্রস থেকে অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে বল জালে পাঠান সানাব্রিয়া।
৬ মিনিট পর লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মেসি। ৪৪তম মিনিটে মেসির শট ব্লক হলে পেয়ে যান আলভারেজ। তবে দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া তার শট ধরতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষক রোবার্তো ফার্নান্দেজের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় প্যারাগুয়ে। গোমেজের ফ্রি কিক থেকে দারুণ এক ডাইভিং হেডে দলকে এগিয়ে দেন আলদেরেতে। পিছিয়ে পড়েও ৬৯তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। বাঁ প্রান্ত থেকে হুলিয়ান আলভারেজের দুরপাল্লার পাস পান রদ্রিগো দি পল। ডান প্রান্ত দিয়ে ফাঁকা পেয়ে ছুটে বল নিয়ে বক্সেও ঢুকে পড়েন। কিন্তু প্যারাগুয়ে গোলকিপার গাতিতো ফার্নান্দেজকে একা পেয়েও বল মারেন পোস্টের ওপর দিয়ে।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে মেসির ক্রস থেকে ভ্যালেন্তিন কাস্তেয়ানোসের হেড একটুর জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পিছিয়ে পড়ে এমন আরও কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। তাতে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে ১১ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা। ১০ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে কলম্বিয়া। ভেনেজুয়েলার মাঠে ১-১ গোলে ড্র করা ব্রাজিল ১১ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়। বলিভিয়াকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে ইকুয়েডর। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে এসেছে দলটি। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পেলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ছয়ে প্যারাগুয়ে।