বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক চায় আজারবাইজান
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯:৩৩:১২
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভছবি: বাসস
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। আজ বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এ কথা বলেন।
ইলহাম আলিয়েভ বলেন, বাংলাদেশ-আজারবাইজান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে তিনি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ খবর দিয়ে জানান, প্রেসিডেন্ট ইলহাম আগামী বছর এক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দল বাংলাদেশে পাঠাতে আগ্রহী। সেই দল আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কীভাবে দুই দেশের সহযোগিতার বহর বাড়ানো যায়।
প্রধান উপদেষ্টাকে ইলহাম বলেছেন, তাঁরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। ঢাকায় এক আবাসিক দূতাবাস খোলার পরিকল্পনাও তাঁদের রয়েছে, যাতে দুই দেশের ব্যবসা, বাণিজ্যসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বহর বাড়ানো যায়।
বাংলাদেশে আগস্ট বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে ইলহাম বলেন, তাঁর দেশের যুব কর্মসংস্থান কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রে তাঁরা মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তাভাবনা থেকে প্রেরণা পেয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আপনি যে কাজ হাতে নিয়েছেন, তা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আপনি সেই চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করবেন।’
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশের সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগাযোগ বাড়লে দুই দেশই সমৃদ্ধ হবে। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আরও বেশি কাজের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টিও অবতারণা করেন ড. ইউনূস।
এ বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি–বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং তুরস্ক ও আজারবাইজানের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক।
প্রধান উপদেষ্টা আজ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গেও দেখা করেন। সে সময় তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে তাঁরা শ্রমনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবেন। তিনি জানান, বিষয়টি তাঁর সরকারের অগ্রাধিকার।
থেরেসা মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অভিবাসন ও মানব পাচারের বিষয়টি উত্থাপন করেন। মুহাম্মদ ইউনূস তাঁকে বলেন, বৈধভাবে অভিবাসন বাড়ানো প্রয়োজন। তাতে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের সমস্যা যেমন মিটবে, তেমনই মানব পাচারের প্রবণতা কমে যাবে।
আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্টের স্ত্রী লু আলকমিন। তাঁদের মধ্যে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়।
ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতি। আগামী বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পরবর্তী জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০। ভাইস প্রেসিডেন্টের স্ত্রী বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের বই তিনি অনুবাদ করেছেন। তাঁর কাছ থেকে প্রেরণা পেয়ে তিনি সে দেশে সামাজিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার দুপুরে বাকু থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।