৭০ বছরে ক্ষিতীদ্র গড়তে চান বিশ্বরেকর্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ আগস্ট ২০২২, ১০:১৭:৪২
ছাত্রজীবন থেকেই সাঁতারের প্রতি ঝোঁক। মাইলের পর মাইল সাঁতরে জাতীয় অনেক পুরস্কারও জিতেছেন। এবার গড়তে চান বিশ্বরেকর্ড। এ কারণে ৭০ বছর বয়সেও অদম্য ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ২৮১ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে সাঁতার শুরু করেছেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেটের সুরমা নদীর চাঁদনীঘাট থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ফেরিঘাটের উদ্দেশে তিনি সাঁতার শুরু করেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত এ সাঁতারু ভাঙতে চান স্পেনের নাগরিক পাবলু ফার্নান্দেজের আড়াইশ কিলোমিটার সাঁতারের রেকর্ড।
ধারণা করা হচ্ছে, ২৮১ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে তাঁর সময় লাগতে পারে ৭০ ঘণ্টা। যাত্রাপথে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার পথ অতিক্রম করবেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, গিনেস বুকে নাম যুক্ত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা কমান্ডের সহায়তায় ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ৭০ ঘণ্টায় ২৮১ কিলোমিটার নদীপথে সাঁতারে পাড়ি দেবেন। এ সময়ে তিনি পানিতেই থাকবেন, খাওয়া-দাওয়া সব কাজ করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করা বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান। তিনি ১৯৭১ সালে ১১ নম্বর সেক্টরের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। ২০১২ সালের মে মাসে অবসর গ্রহণ করলেও এখন কনসালট্যান্ট হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধীনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করছেন। ছাত্রজীবন থেকে সাঁতার তাঁর নেশা। তিনি একজন ‘অবিরাম শৌখিন সাঁতারু’।
তিনি জানান, ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটানা ৯৩ ঘণ্টা ১১ মিনিট সাঁতার কেটে রেকর্ড গড়েন। তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রুপার নৌকা দিয়ে তাকে সম্মানিত করেন। পরে ১৯৭৬ সালে ১০৮ ঘণ্টা ৫ মিনিট অবিরাম সাঁতার কেটে আবার জাতীয় রেকর্ড সৃষ্টি করেন। ২০১৮ সালে ১৮৫ কিলোমিটার দূরপাল্লার সাঁতার সম্পন্ন করেন, যা ছিল আরেকটি স্থানীয় রেকর্ড।
এ সাঁতারু বলেন, ১৯৭০ সাল থেকেই তিনি দূরপাল্লার বা অবিরাম সাঁতারের সঙ্গে জড়িত। সেবার নেত্রকোনার মদনে টানা ১৫ ঘণ্টা সাঁতার কেটেছিলাম। ১৯৭৩ সালে সিলেটের এমসি কলেজের পুকুরে টানা ৮২ ঘণ্টা সাঁতার কাটেন। সাঁতারে জাতীয় পর্যায়ে চারটি পুরস্কার পেয়েছেন।
নৌ পুলিশ সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির আখন্দ বলেন, সুরমা, ধনু, গৌত্র ও মেঘনা- এ চার নদীতে বিরামহীন সাঁতার যাত্রায় তিনটি নৌকায় তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এ সময় তাঁকে খাবার সরবরাহ করা হবে এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হবে। পুলিশ সুপার বলেন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, নৌ পুলিশসহ সিভিল সার্জনের একাধিক টিম সাঁতারুর সঙ্গে আছে। তাঁর শারীরিক বা স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা যেন না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।