হিজড়াদের দল ভারি করতে কিশোরের অঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১:৫৯:১৯
মেয়েদের স্টাইলে কথা বলাটাই কাল হলো ১৮ বছর বয়সী ইয়াছিন আরাফাতের। জোর করে তাকে মাদারীপুর থেকে মাইক্রোবাসে তুলে খুলনায় নিয়ে গিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালকদের বিরুদ্ধে।
ঘটনার ৪ দিন পর রোববার ওই কিশোরকে প্রাইভেটকারে নিয়ে এসে শহরের পানিছত্র এলাকায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। সোমবার বিষয়টি জানাজানির পর জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ইয়াছিন সদর উপজেলার চর গোবিন্দপুর এলাকার রেজাউল মোড়লের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এদিকে ঘটনার পর পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা। প্রধান অভিযুক্ত নুরু ওই বাবনাতলা মোড় এলাকার খলিল বকতির ছেলে।
ভুক্তভোগীর পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার মঠের বাজার থেকে ইয়াছিন আরাফাতকে জোর করে মাইক্রোবাসে তোলে স্থানীয় হিজড়াদের ভ্যানচালক নুরু বকতি। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। সেখানে ওই কিশোরকে অচেতন করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। ইয়াছিনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় রোববার সকালে একটি প্রাইভেটকারে এনে মাদারীপুর শহরের পানিছত্র এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালক নুরু তাদের দলে নিতেই ওই কিশোরের লিঙ্গ পরিবর্তন করে। ইয়াছিনের মেয়েদের স্টাইলে কথা বলার অভ্যাস থাকার কারণেই হিজড়াদের দল ভারি করতে ইয়াছিনের সঙ্গে এমন অমানবিক ঘটনা হয়েছে উল্লেখ করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
ইয়াছিনের দাদি ফুলজান বিবি বলেন, আমার নাতির জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।
মানবাধিকার কর্মী সুবল বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এমন অমানবিক ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ইয়াছিনকে পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রস্রাবের জন্য আলাদা একটি পাইপ বসানো হয়। ইয়াছিনের অবস্থা গুরুতর।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।