সিলেটে মঙ্গোলিয়াকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০২২, ১০:৫৪:৪২
দর্শকরা ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে গ্যালারি মাতিয়ে রাখলেন। চার বছর পর নিজেদের মাঠে লাল-সবুজ দলের খেলা দেখতে পেরে তাদের উল্লাস দেখে কে! কিন্তু মাঠের খেলাতে জামাল ভূঁইয়ারা সমর্থকদের মন জয় করতে পারেনি। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ এগিয়ে থাকা মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে আধিপত্য দেখালেও জিততে পারেনি। সিলেটের ফিফা প্রীতি ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ।
এই প্রীতি ফুটবলেই গত ২৪ মার্চ মালদ্বীপের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখালেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলেনি। একের পর এক আক্রমণের ঢেউ প্রতিপক্ষের সীমানায় আছড়ে পড়লেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি কেউই!
ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশ আধিপত্য দেখাতে থাকে। একের পর এক আক্রমণও হয়েছে। কিন্তু ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের প্রথমার্ধে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে এগিয়ে যাওয়া হয়নি জামাল ভূঁইয়াদের। বিরতির আগে সুমন রেজার জোরালো শট বার কাঁপালে গোল পাওয়া হয়নি। গোলশূন্য স্কোরলাইন রেখেই বিরতিতে যেতে হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে দুই পরিবর্তন এনে একাদশ সাজিয়েছেন নতুন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। বিশ্বনাথ ঘোষ ও বিপলু আহমেদের জায়গায় রিমন হোসেন ও আতিকুর রহমান ফাহাদ। ৪-১-৪-১ ছকে বাংলাদেশ বলের দখলে এগিয়ে থেকে গোল করার চেষ্টা করেছে।
বিশেষ করে উইঙ্গার রাকিব হোসেন গতিতে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের টপকে বাঁ প্রান্ত দিয়ে অন্তত তিনবার বক্সে ঢুকে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন, ফাইনাল পাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু সতীর্থ কেউই সেখান থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।
ম্যাচ ঘড়ির দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ কড়া নাড়ে দরজায়। কিন্তু মোহাম্মদ ইব্রাহিমের পাস ধরে বাঁদিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রাকিব আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান গোলমুখে। গোলকিপারের গ্লাভস গলে বল বেরিয়ে গেলেও ঠিক পজিশনে থাকতে না পারা সুমন রেজা পারেননি পা ছোঁয়াতে।
চতুর্থ মিনিটে মাঠে একটি কুকুর ঢুকে পড়লে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। মিনিট চারেক পর ফের শুরু হয় খেলা। ১০ মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। কিন্তু জামালের কর্নার লাফিয়ে উঠেও হেড করতে পারেননি ইয়াসিন আরাফাত।
পাঁচ মিনিট পর দুজনকে কাটিয়ে ইয়াসিন নিখুঁত থ্রু পাস বাড়ান বক্সে। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন ইব্রাহিম।
৪১ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয়। সোহেল রানা পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের ওপর থেকে শরীর ঘুরিয়ে শট নেন সুমন। বল গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে।
ইনজুরি সময়ে জামালের কর্নারে ইয়াসিনের হেডে সুমনের বাঁ পায়ের জোরালো ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেলে এই অর্ধে আর এগিয়ে যাওয়া হয়নি।
বিপরীতে মঙ্গোলিয়া একবারের জন্যও স্বাগতিক গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোর পরীক্ষা নিতে পারেনি।
বিরতির পরও একই তালে খেলেছে বাংলাদেশ। হাফ টাইমের পর প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেছে। একাদশে বদলও হয়েছে একের পর এক। নাবীব নেওয়াজ জীবন-রায়হান হাসানরা নেমেও ম্যাচের ভাগ্য বদল করতে পারেনি।
৭১ মিনিটে রিমনের নিচু পাসে জামালের ফ্লিক কর্নারের বিনিময়ে আটকান সফরকারী গোলকিপার। চার মিনিট পর সিলেটের ছেলে বিপলু লাইনের পাশে আসতেই গ্যালারির উচ্ছ্বাস আরও বাড়ে। এরপরই জাফরের পাসে বিপলুর ভলি যায় বাইরে।
শেষের দিকে রায়হান নেমে লম্বা থ্রো-ইন করে আক্রমণে ধার বাড়ান। জোরালো শট নিলেও তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। গোল আর পাওয়া হয়নি।
ফরোয়ার্ডদের একের পর এক ব্যর্থতায় ২১ বছর পর মঙ্গোলিয়া-বধ হলো না!