বাংলাদেশিদের বৃটিশ পাসপোর্টে ভিসা প্রথা বাতিল করার দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:০২:০৫
স্টাফ রিপোর্টার : বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী অসংখ্য বাংলাদেশি বৃটিশ পাসপোর্টধারীদের ১০ ও ৫ বছর মেয়াদে নো ভিসা সিল দেয়া হয়। এতে প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে গিয়ে আমাদেরকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আমাদের মুখের ছবি, চেহারা, ভাষা ও সংস্কৃতিতে সুস্পষ্ট বাংলাদেশির পরিচয় ফুটে ওঠে। এ ছাড়া বৃটিশ পাসপোর্টে যার যার জাতিগত একটা পরিচয় রয়েছে। ফলে জাতিগত পরিচয় গোপন করার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা দেশে আসতে চাইলে প্রচলিত ভিসাপ্রথা বাতিল করতে হবে। তা না করা হলে নতুন প্রজন্ম দেশে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। আমাদের প্রবাসীদের দাবি হলো- দেশে আসতে বৃটিশ পাসপোর্টে যে ভিসাপ্রথা রয়েছে তা বাতিল করতে হবে।
এ দাবি জানিয়েছেন প্রবাসে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ন্যাপের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ। তিনি গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান।
এ সময় তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা জনমত গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করে। যুক্তরাজ্য প্রবাসীর অনেকেই যার যার অবস্থান থেকে জনমত গঠনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এ ছাড়াও তহবিল সংগ্রহ করে আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসে বিশ্ব জনমত গঠনে অবদান রাখা ব্যক্তিবদের নাম তালিকাভুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসে আমাদের অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসে বিশ্ব জনমত গঠনের অবদান রাখা ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা দেয়ায় আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা অনেকবার যাচাই-বাছাইয়ের পরও অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে হাইকোর্ট থেকেও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের তালিকাভুক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে। তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
আগ্নেয়াস্ত্রের সার্ভিস চার্জ কমানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। আমরা প্রবাসীরাও নিজের নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স করি। বিদেশ যাওয়ার সময় লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি স্থানীয় থানায় জমা রেখে যাই। লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কঠিনতম আইন হওয়ায় দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত নাগরিকরা যারা সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেন তারা এখন অতিরিক্ত ফি বৃদ্ধির কারণে তারা তাদের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র স্যারেন্ডার করছেন। তাতে তাদের পরিবারের জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। অস্ত্র জমা রাখার জন্য সরকারের একটি সার্ভিস চার্জ রয়েছে। যা বর্তমানে পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।
দেশে আসলে অবৈধ অস্ত্রধারীদের কারণে প্রবাসীরা আতঙ্কে থাকেন জানিয়ে তিনি অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।