ব্রিটিশ রানির এ্যাওয়ার্ড পেলেন শেহরিন সেলিম ও মোহাম্মদ আফরোজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৫৯:২২
মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান, লন্ডন থেকে : বছরের শুরুতে ব্রিটিশ রানির এমবিই খেতাব পেলেন শেহরিন সেলিম রিপন ও বিইএম অর্জন করেছেন মোহাম্মদ আফরোজ ।
এ রিপোর্টটি লেখার পূর্ব পর্যন্ত এ বছর এ ২ জন ব্রিটিশ- বাংলাদেশি ব্রিটিশ রানি কর্তৃক এ সব এ্যাওয়ার্ড পাওয়ার তথ্য জানা গেছে।
ব্রিটেনের রানির জন্মদিন ও নববর্ষে প্রতি বছর সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ‘এমবিই’ ও অন্যান্য খেতাব / এ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় এবছর শেহরিন সেলিম রিপন ব্রিটিশ রানির ‘এমবিই’ ও বিইএম অর্জন করেছেন মোহাম্মদ আফরোজ ।
শেহরিন সেলিম রিপন :
যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের সেবার জন্য নতুন বছরে মেম্বার অব দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাম্পায়ার (এমবিই) খেতাবে ভূষিত হয়েছেন মো. শেহরিন সেলিম রিপন।
শৈশব থেকেই তিনি কমিউনিটিতে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন।
বিশেষ করে লন্ডনে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তাদের সহযোগিতার জন্য তিনি তার মেধা ও শ্রম দিয়ে ‘কর্ম স্বাধীন’ নামে একটি প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। যেখানে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
তিনি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
এছাড়াও পূর্ব লন্ডনের উডফোর্ডের বাসিন্দা মো. শেহরিন সেলিম রিপনের কমিউনিটিতে বেশ সুপরিচিতি রয়েছে।
তিনি যুক্তরাজ্যে সর্ব ইউরোপিয়ান বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জাতীয় চারনেতা পরিষদের সহ-সভাপতি হিসেবে এবং বাংলাদেশে ‘শহীদ ক্যাপটেন মনসুর আলী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ এর সভাপতির দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় নেতা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র, আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. সেলিমের ছেলে হলেন মো. শেহরিন সেলিম রিপন।
—-
ইংল্যান্ডে ব্রিটিশ এম্পায়ার মেডেল অর্জন করেছেন মোহাম্মদ আফরোজ :
কে সেই মোহাম্মদ আফরোজ ?
ইংল্যান্ডে রানিংম্যান হিসেবে সমধিক পরিচিত কমিউনিটি এক্টিভিস্ট ব্রিটিশ-বাংলাদেশী মোহাম্মদ আফরোজ মিয়া ।
তিনি করোনা মহামারী শুরুর পর মানুষের কল্যানে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ এম্পায়ার মেডেল (বিইএম) খেতাব অর্জন করেছেন।
তহবিল সংগ্রহ ও ওল্ডহ্যাম ও বৃহত্তর ম্যানচেস্টারে করোনাকালীন সময়ে সেবা দেওয়ায় ওল্ডহ্যামের বাসিন্দা ৪৯ বয়সী মোহাম্মদ আফরোজ মিয়াকে এবার ইংরেজি নববর্ষের সম্মাননার অংশ হিসেবে সম্মানসূচক বিইএম এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
তিনি দেশে-বিদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সহায়তায় গত দুই বছর প্রায় অর্ধ মিলিয়ন পাউন্ড সংগ্রহ করে ব্যক্তি পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের এক নতুন নজির স্থাপন করেন।
চ্যারিটির জন্য এই বিপুল পরিমান অর্থ সংগ্রহ করার স্বীকৃতি হিসেবে রাণীর দেয়া নতুন বছরের সম্মাননা পেলেন তিনি।
মোহাম্মদ আফরোজ মিয়া দুই বছর আগে উচ্চ রক্তচাপের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্বাস্থ্য নিয়ে তার মধ্যে যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছিলো তাকে জয় করতে তিনি নিয়মিত দৌঁড়ানো শুরু করেন। এক সময় তিনি তাঁর এই দৌড়কে চ্যারিটির উদ্দেশ্যে নিবেদিত করেন।
গত বছরের রমজান মাসে রোজা রাখার অবস্থায় ওল্ডহ্যাম থেকে লন্ডন পর্যন্ত দৌড়ে পাড়ি দিয়ে তিনি দেশবাসীর নজর কাড়েন। ঐ সময় তিনি আট দিনে আটটি শহরে হাফ ম্যারাথন দৌড়েছিলেন এবং গত বছর অক্টোবরে তার প্রথম লন্ডন ম্যারাথন সম্পন্ন করেন।
আফরোজ মিয়ার বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায়।
তিনি বর্তমানে ইংল্যান্ডের ওল্ডহ্যাম শহরের বাসিন্দা এবং আফরোজ মিয়া দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।