বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কমেছে: মার্কিন রিপোর্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৪৬:২৬
২০২০ সালে সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশে আগের থেকে কমেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম ২০২০’ এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কমার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত তদন্ত ও গ্রেফতার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) এ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালে সারা বিশ্বে মোট সন্ত্রাসবাদী হামলার সংখ্যা হচ্ছে ১০ হাজার ১৭২টি। যা আগের বছর ছিল ৮ হাজার ৮৭২টি। ২০২০ সালে এসব হামলায় হতাহতের সংখ্যা হচ্ছে ২৯ হাজার ৩৮৯ জন যা আগের বছরে ছিল ২৬ হাজার ২৭৩ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশে মোট তিনটি সন্ত্রাসী হামলা হয় এবং ওই ঘটনাগুলোতে কেউ নিহত হয়নি। এরমধ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণ এবং নওগাঁ জেলায় ৩১ জুলাই একটি হিন্দু মন্দিরে হামলা হয়। আইসিস এর দায় স্বীকার করে। এছাড়া ২৪ জুলাই ঢাকায় পুলিশ মোটরসাইকেলে একটি ছোট বোমা পাওয়া যায় কিন্তু পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় সেটি ছিল নকল বোমা। চট্টগ্রামের হামলায় দুইজন পুলিশ ও একজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয় কিন্তু নওগাঁর ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে মোট ছয়টি হামলা হয় যার সবগুলোর দায় আইসিস স্বীকার করে। এরমধ্যে পাঁচটি ছিল পুলিশের উপর হামলা আর অপরটি ছিল খুলনায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা বিস্ফোরণ।
মার্কিন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট এবং র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) গোটা বছর জুড়ে উগ্রবাদ দমন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এছাড়া বিদেশি সন্ত্রাসী গ্রেফতার, তদন্ত ও সমাজে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করেছে।
বিদেশে বাংলাদেশি সন্ত্রাসী
গত বছর দুইজন বাংলাদেশি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের জন্য বিদেশে গ্রেফতার হয়। এরমধ্যে একজন গত বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে আইসিস এর হয়ে প্রচারণা চালানো, সশস্ত্র সহিংসতায় উৎসাহ দেওয়া এবং সিরিয়াভিত্তিক হায়াত তাহরির আল-সামকে অর্থ প্রদানের অভিযোগে গ্রেফতার হয়।
এছাড়া গত বছরের ২৭ এপ্রিল স্পেনে বসবাসরত একজন বাংলাদেশিকে আইসিসের হয়ে তহবিল সংগ্রহের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হোলি আর্টিজান
মার্কিন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় হোলি আর্টিজান সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে আপিল এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
ওই সন্ত্রাসী ঘটনায় একজন মার্কিন নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হয় এবং হামলাকারীরা আইসিসের অনুসারী বলে নিজেদের দাবি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহায়তা
যুক্তরাষ্ট্রের কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম এ বলা হয়েছে, সীমান্ত ও প্রবেশ বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। এতে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কে৯ টিম বিমানবন্দরে টহল দিয়ে থাকে কিন্তু সবসময় নয়। ইন্টারপোলকে সবসময় তথ্য দিয়ে থাকে বাংলাদেশ কিন্তু দেশটিতে সার্বক্ষণিক টেরোরিস্ট এলার্ট লিস্ট নেই। চিহ্নিত ও সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের জাতীয়ভাবে তালিকা তৈরির জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাবে।