নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে লাখো ব্রিটিশ-বাংলাদেশি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ৬:৫৬:২০
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে কোনও নোটিশ ছাড়াই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারাতে পারে ব্রিটিশ বাংলাদেশিসহ ৬০ লাখ নাগরিক। আইনটি পাস হলে, ব্রিটেনে এথনিক মাইনোরিটি কমিউনিটি থেকে আসা প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে দুই জন নাগরিকত্ব মর্যাদা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন।
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে ৪১ শতাংশ নাগরিক কোনও নোটিশ ছাড়াই নাগরিকত্ব হারাতে পারেন। জানা গেছে, ২০০৬ সাল থেকেই ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ব্রিটিশ জনগণের স্বার্থে দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিলের ক্ষমতা বিদ্যমান রয়েছে। ২০১৪ সালে রাষ্ট্রের হাতে নাগরিকত্ব বাতিলের এ ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তখন নিয়ম করা হয়, বিদেশে জন্ম নেওয়া ব্রিটিশ নাগরিকদের ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব নেই, এমন নাগরিকদেরও সরকার ব্রিটেনের স্বার্থে চাইলে রাষ্ট্রহীন করতে পারবে।
এমন বাস্তবতার মধ্যে সরকারের এ নতুন বিলটি পাস হলে ব্রিটেনের নাগরিকদের রাষ্ট্রহীন করার ক্ষমতা আরও বড় পরিসরে সরকারের হাতে চলে যাবে। খসড়া বিলের ৯টি ধারায় বলা আছে, সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে কোনও নোটিশ ছাড়াই নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারবে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে ব্রিটেনে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া ২ লাখ ১২ হাজারের বেশি ব্রিটিশ নাগরিক রয়েছেন। এ বিতর্কিত বিলটি যাতে না পাস হয় সেজন্য ব্রিটেনে বিভিন্ন সংগঠন সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে।
ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কে এম আবু তাহের চৌধুরী বলেন, ব্রিটেনের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব বিলে কোনও নোটিশ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়া বিলটি বাতিলের বিষয়টি মানবিক অধিকারের পরিপন্থী। এ আইনে ব্রিটেনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
‘আমি মনে করি, এটি হটকারী ও অমানবিক সিদ্ধান্ত। এতে একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণ হবে’।
লন্ডনে বসবাসরত সাংবাদিক মাহবুব বলেন, ব্রিটেনের মতো দেশ যখন তার নাগরিকদের বিনা নোটিশে রাষ্ট্রহীন করার আইন করছে, তখন সেটি গভীর উদ্বেগজনক।
এ বিল আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া ব্রিটেনে বসবাসরত কয়েক লাখ ব্রিটিশ নাগরিক এখানকার নাগরিকত্ব হুমকির মুখে পড়বে। হাউজ অব লর্ডস ও হাউজ অব কমন্সের সকল আইনপ্রণেতা কাছে তুলে ধরে, কমিউনিটিতে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ মুহূর্তে সামাজিক সংগঠনগুলোর এগিয়ে আসা প্রয়োজন।