নুর ও রেজা কিবরিয়ার নামে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩২:৫৪
সদ্য ঘোষিত বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক হামলার মদদদাতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এ অভিযোগ দায়ের করেন। রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক ছাড়াও যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৫ই অক্টোবর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিজয়া দশমীর পূজা উৎসবে বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ নামক জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক সংগঠনের স্থানীয় কতিপয় নেতা বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে নূরুল হক নূর ও রেজা কিবরিয়ার নির্দেশে জেএমসেন হলসহ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে হামলা চালায়। যাদের কেউ কেউ পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হয়। উক্ত ঘটনার পরপরই এবং অতীতে বিভিন্ন সময়ে যুব অধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহবায়ক তারেক রহমান ফেসবুকে লাইভ করে উক্ত ঘটনা অস্বীকার করে বলে, ঊহা ২০২০ সালের সিসিটিভি ফুটেজ।
লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘কোনো দেশ যদি থাকে বিশ্বে ১ নং চিটিংবাজ তা হলো ভারত, যারা নিজেদের কোনো আদর্শ নেই, এথিক্যাল পয়েন্ট নেই, এর সঙ্গে ও লাগাই, এ ওর সঙ্গে লাগাই, ধর্ম গ্রন্থ নয়, যেন চটি গ্রন্থ এইগুলা।’ এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তারেক রহমান বাংলাদেশের মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে ও উস্কানি দিয়ে কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে মন্দির হামলায় বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের উস্কে দিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বৈধ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার পল্টনের জামান টাওয়ারে গণ অধিকার পরিষদের আহবায়ক নিষিদ্ধ সংগঠন জামাতের সঙ্গে জোট করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করার ঘোষণা দিয়েছেন যা দেশের প্রচলিত আইন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। এছাড়াও নুরুল হক নূর চট্টগ্রামের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলাকারীদের নিরপরাধ বলে বক্তব্য দিয়েছেন যা সাম্প্রদায়িক হামলাকে উস্কে দেওয়ার শামিল।
মামলার বিষয়ে আল মামুন বলেন, গণ অধিকার পরিষদের আত্মপ্রকাশের দিন রেজা কিবরিয়া প্রয়োজনে জামায়াতের সাথে জোটের কথা স্বীকার করেছেন। এর মাধ্যমেই বোঝা যায়, সারাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোতে নুরদের মদদ ছিলো। তারা জামায়াতের সাথে আঁতাত করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে।
কিছু ভূঁইফোড় সংগঠনের মাধ্যমে সরকার এসব কাজ করাচ্ছে জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, সাধারণ জনগণের সম্মানহানি করার জন্য সরকারী দলের পৃষ্ঠপোষকতায় এসব মামলা করা হচ্ছে। সরকার এখন নিজের দল দ্বারা হামলা মামলা করালে নিজেরা বিতর্কিত হবে এমন আশঙ্কা থেকে তারা কিছু ভূঁইফোড় সংগঠন দিয়ে এসব কাজ চালাচ্ছে। দেশে বিদেশে আমাদের ভাইদেরকে বিতর্কিত করার জন্য এসব কাজ করা হচ্ছে। সরকারী দল ছাড়া এখন মাঠে কোন রাজনৈতিক দল ক্রিয়াশীল নেই। আমরা গণ মানুষের অধিকারের কথা চিন্তা করে যখনই একটি দল গঠন করেছি তখন আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার করা শুরু করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। অভিযোগের যদি আইনগত ভিত্তি থাকে তাহলে আমরা এটি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবো। আর যদি রাজনৈতিক ভিত্তি থাকে তাহলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, এটা সাইবার ক্রাইম ডিভিশনে যাবে। তারা যাচাই-বাছাই করে মতামত দেওয়ার পর মামলা নেওয়ার মতো হলে আমরা মামলা নেব।