‘সিআইডি’ সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথে ডাকাতির পরিকল্পনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৪:৫৭
ভারতের মেগাসিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিলেটের ওসমানী নগরে ইউসিবি ব্যাংকের এটিএম বুথ ভেঙে টাকা লুট করেন ডাকাত দলের সদস্যরা। সিআইডি দেখে ব্যাংকের বুথের সিসি ক্যামেরায় কালো স্প্রে মেরে ক্যামেরা ঝাপসা করে বুথের লক ভেঙে ডাকাতি করা সেই টাকা জুয়া খেলে উড়িয়ে দেন তারা।
এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ইউনিট। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজারে হাজী ইউনুস উল্লাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেডের এটিএম বুথ থেকে টাকা লুট করে ডাকাত দলের সদস্যরা।
বুথের পাহারাদারদের হাত-পা বেধে ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে তারা ভেতরে প্রবেশ করে। শাবল দিয়ে বুথ ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
হারুন অর রশীদ বলেন, এ ঘটনায় ওসমানী নগর থানায় মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ওসমানী থানা মামলার তদন্ত শুরু করে ও ডিএমপির সাইবার ইউনিটের কাছে সহযোগিতা চায়। এরপর কাজ শুরু করে ডিএমপির সাইবার ইউনিট।
প্রথমে ঢাকা থেকে নূর মোহাম্মদ নামে এক দর্জিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হবিগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে শামীম আহম্মেদ ও আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সিরিয়াল দেখে টাকা লুটের এ পরিকল্পনা করা হয়। দলের প্রধান শামীম আহম্মেদ। একসময় ওমান প্রবাসী শামীম কয়েক বছর আগে দেশে ফেরেন। দেশে এসে তেমন কোনো কাজ-কর্ম করতেন না।
প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শামীম নিয়মিত ভারতের মেগা সিরিয়াল সিআইডি দেখতেন। সিআইডি দেখেই পরিকল্পনা করে এটিএম বুথে লুট করেন তারা।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সিসি ক্যামেরায় কালো রং এর স্প্রে করা, মুখমন্ডলে কাপড় পেচিয়ে শাবল দিয়ে বুথ ভাঙ্গা সবই ভারতের সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তারা।’
লুটের দশ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। টাকার একটি অংশ দিয়ে তারা জুয়া খেলেছে। এছাড়া লুট করার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল, ছুরি, প্লাস ও মাথায় ব্যবহার করা তিনটি কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে জহির নামে একজন এখনো পলাতক।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ঘটনাটি ডিএমপির মধ্যে সংঘটিত না হলেও আমরা কাজ করেছি। অপরাধীদের জানাতে চাই, দেশের যেখানেই এধরনের অপরাধ করা হোক না কেন, কেউ পার পাবে না।’
সাইবার ইউনিটের উপ পুলিশ কমিশনার শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘লুট করা টাকা দিয়ে তারা জুয়া খেলেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে। তদন্ত চলছে, সিলেট পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তখন আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোস্তফা তারেক জানান, এ ঘটনার সঙ্গে ব্যাংকের কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।