বিমানবন্দরে কবে থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু, জানেন না দুই মন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ৭:৩৩:৩২
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে কবে নাগাদ করোনার পরীক্ষা শুরু হবে, তা সরকারের দুই মন্ত্রী জানাতে পারেননি।
মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দর পরিদর্শন কালে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের কাছে কবে নাগাদ বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষাগার বসবে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরে পার্কিংয়ের ছাদ তৈরি করতে ১০ দিন লাগবে। ভেতরে যে জায়গা আছে, সেটা তৈরি আছে। দু–তিন দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। যারা কাজ করবে বলেছে, যদি এখন তারা বলে যন্ত্র নেই, আমদানি করতে হবে, তাহলে আমি বলব বাড়িতে যাও।’
ইমরান আহমদ আরও বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে সময় বেশি লাগে। তবে র্যাপিড পিসিআর করতে সময় কম লাগে। এদিকে র্যাপিড পরীক্ষার যন্ত্র দেশে নেই।
করোনার পরীক্ষাগার কবে চালু হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘এটা তো এক সপ্তাহ আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ইনভলভমেন্ট এটা একটা সমস্যা।’ তিন দিনের মধ্যে বিমানবন্দরের করোনা পরীক্ষাগার চালু হবে বলে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর আশা। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব হলো প্রবাসীদের যাওয়াটা সহজ করে দেওয়া। এই প্রক্রিয়া সহজ করে দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের। আজকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে, এত দিন আমরা ঘোরার মধ্যে ছিলাম।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত সে দেশে যেতে যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষার শর্ত আরোপ করে। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না প্রবাসীরা।
পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের শর্ত, যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার লাগবে, সেই পরীক্ষাগার বসাতে জায়গা লাগবে। দ্রুত এই কাজ শুরু করার জন্য বিমানবন্দরের ভেতরে একটি জায়গা দেওয়া হয়েছে। ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। তারা আপাতত ছোট আকারে সেখানে পরীক্ষাগার বসাবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে স্টিলের কাঠামো করে পরে করোনার আরেকটি পরীক্ষাগার বসানো হবে। মজবুত সেই জায়গা শীততাপনিয়ন্ত্রিত থাকবে, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে। এটা করতে তো একটু সময় লাগবে।
এসওপি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পাঠানোর পর কোনো জবাব এসেছে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়গুলো আমরা দেখছি না, এটা বেবিচক দেখছে। যত দূর জানি, সে উত্তর তারা এখনো পায়নি।’
কবে নাগাদ চালু হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে কাজ ছিল, সেটি মন্ত্রণালয় থেকে করা হয়েছে। আমরা প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে দিয়ে দিয়েছি। আমরা যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম প্রস্তাব করেছিলাম, সে কয়টি তারা নির্বাচিত করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এসবের জবাব না দিলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।’
বিমানবন্দরে প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে করানোর পরীক্ষাগার বসবে। এখন আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে বিমানবন্দরের ভেতরে পরীক্ষার বসানো হবে।
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘করোনার পরীক্ষাগার স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে হয়েছে। এ কারণে নতুন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর আবার দিতে হবে কিনা আমি নিশ্চিত নই।’