দেশের রাস্তায় চলবে বৈদ্যুতিক গাড়ি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ৭:৫৪:১৪
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার দেশেও বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানির নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বে দারুণ জনপ্রিয় এই গাড়ি কীভাবে দেশে চালানো যায় এখন সেসব বিষয় ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, গাড়ি আমদানির প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে তাদের কাজগুলো আগে-ভাগেই শেষ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি সংক্রান্ত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, চার্জিং স্টেশন কেমন হবে, কী ধরনের ট্যারিফ নির্ধারণ হবে, যানবাহনের সার্বিক তথ্য কোথায় -কিভাবে সংরক্ষিত হবে, এসব বিষয় নির্ধারণ করে আগে-ভাগে প্রস্তুতি নিতে হবে। গাড়ি আমদানি শুরু হলো আর দেশে কোথাও চার্জিং স্টেশন নেই-এমনটা হলে ক্রেতারা বিপাকে পড়বেন। একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের বাইরে আর যাতায়াত করা সম্ভব হবে না।
বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি সংক্রান্ত একটি অনলাইন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বৈদ্যুতিক যানবাহনের চার্জিং নীতিমালা গ্রাহকবান্ধব হতে হবে। পুরো বিশ্বে বর্তমানে অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো বৈদ্যুতিক গাড়ি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ‘বৈদ্যুতিক যান চার্জিং বিষয়ক নির্দেশিকা’ বিষয়ক ভার্চুয়াল সভায় সভাপতির বক্তব্যে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা। নিরাপদ, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি এই বিপ্লবের গতিপথ পাল্টে দেবে। আবার অন্যদিকে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় পরিবেশ। পরিবেশের ভারসাম্য রাখতে বৈদ্যুতিক গাড়ির উত্থান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। এ সময় তিনি প্রত্যেকটি বিতরণ কোম্পানিতে বৈদ্যুতিক যান চার্জিং বিষয়ক টিম রাখার নির্দেশ দেন।
পেট্রোলচালিত যানের ১ হাজার কিলোমিটার যেতে গড়ে যেখানে ৫৩৭৫ টাকা খরচ হয় সেখানে বৈদ্যুতিক যানবাহনের লাগবে ১২৫০ টাকা। বৈদ্যুতিক যানবাহন পরিবেশবান্ধব এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের যান্ত্রিক দক্ষতা পেট্রোল যানের অনেক বেশি। সভায় অংশীজনরা সমন্বিতভাবে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন। বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান বলেন, বৈদ্যুতিক যানবাহনের রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলমান।
পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বে ২০২০ সালে অন্য সব মোটরগাড়ির বিক্রি যেখানে কমেছে, সেখানে ইভি গাড়ির বিক্রি ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। মোট গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩২ লাখ। যদিও এর বেশিরভাগেই আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলোতে। তবে এশিয়ায় চীন এবং ভারতও বৈদ্যুতিক গাড়ি রাস্তায় নামানোর উদ্যোগে পিছিয়ে রয়েছে। তবে আগামী প্রজন্মের এই গাড়িতে কেন্দ্র করে মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। একবার চার্জে এক টানা ৩০০ মাইল চলার মতো গাড়িও বাজারে এনেছে বিশ্বখ্যাত মটরগাড়ি নির্মাতা মার্কিন টেসলা। এছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন গাড়ির ব্রান্ডের গাড়িকে ফসিল ফুয়েলের বদলে বিদ্যুতে চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল-এর চেয়ারম্যান (সচিব) সত্যজিত কর্মকার, স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর চেয়ারম্যান মে. জে. মঈন উদ্দিন (অব.), পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দফতর প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।